চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষি অফিসের সরকারি প্রণোদনার রাসায়নিক সার দোকানে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর আড়াই মেট্রিক টন বিক্রি করা সার দোকান থেকে ফেরত নেওয়া হয়। গত সোমবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার মহাডাঙ্গা এলাকার একটি দোকান ও আরেকটি বাড়ি থেকে ওই সার ফেরত নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুনাইন বিন জামান দোকান থেকে সার ফিরিয়ে নেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কৃষি অফিস জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের খরিপ-১ মৌসুমের প্রণোদনার অংশ হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ৬ হাজার ৫০০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে সার-বীজ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। তালিকাভুক্ত প্রত্যেক কৃষককে ৫ কেজি করে ধান বীজ, ১০ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি ডিএপি সার দেওয়া হচ্ছে। একেক দিন একেক ইউনিয়নের কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে এসব সার-বীজ।
জানা গেছে, উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের কৃষকদের দেওয়া সারের আড়াই মেট্রিক টন বিক্রি করে দেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাকিব উদ্দীন। ওই সার বিক্রির জন্য কিনে নেন মহাডাঙ্গা এলাকার সার ব্যবসায়ী সাইফুল ট্রেডার্সের মালিক সাইফুল ইসলাম। বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার সন্ধ্যায় মহাডাঙ্গা এলাকার সাইফুল ট্রেডার্স ও অন্য একটি বাড়ি থেকে প্রায় আড়াই মেট্রিক টন সার জব্দ করা হয়।
সারের ক্রেতা সাইফুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রাকিব বলেন, ‘পূর্ব পরিচিত হওয়ায় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাকিব উদ্দীন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সার বিক্রির জন্য। প্রথমে কিছু না বুঝেই আমরা সারগুলো কিনে নিয়েছি। কিন্তু পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোকানে এসে সারগুলো ফিরিয়ে নিয়ে যান। আব্দুর রাকিব বলেন, ‘সারগুলো প্রণোদনার সার, এটা আগে ওই কৃষি কর্মকর্তা বলেননি। এটা জানলে সেগুলো কিনতাম না।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাকিব উদ্দীন তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুনাইন বিন জামান বলেন, ‘উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহের পর নিরপেক্ষ বিতরণকারী উপস্থিতি সার বিতরণ করা হয়। কিন্তু অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তা নিরপেক্ষ বিতরণকারীর স্বাক্ষর জাল করে সারগুলো উত্তোলন করেছিলেন। সারগুলো উদ্ধারের পর কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ‘প্রণোদনার সার বিক্রির ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. ইয়াছিন আলী বলেন, বিষয়টি শুনেছি, এবং ঐ এলাকায় বিতরণ স্থগিত রাখতে বলেছি। তদন্তের পরই দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি কৃষি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক, মোঃ মুনজের আলম মানিক বলেন, এগুলো প্রান্তিক কৃষকদের হক। প্রান্তিক কৃষকদের বঞ্চিত করে সার বিক্রি করা অপরাধ। তাই এই কাজের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা জরুরী।
যাযাদি/ এম