বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে ভারতীয় হাতির পাল

প্রকাশ | ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ২০:২০

কলমাকান্দা (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

নেত্রকোনার কলমাকান্দা সীমান্ত এলাকায় খাবারের সন্ধানে ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে একটি হাতির পাল। পরে জাগিরপাড়া এলাকায় কাঁচাপাকা ধান ক্ষেতে দুই ঘণ্টা তান্ডব চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে ওই হাতির পাল। এতে করে হাতির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সীমান্ত এলাকার জাগিরপাড়া, হাতিবেড়, চন্দ্রডিঙ্গা, বেতগড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড় থেকে প্রতি বছর খাদ্যের সন্ধানে বন্যহাতির পাল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। ভাঙচুর করে বাড়িঘর, গাছপালা ধ্বংস ছাড়াও হাতির আক্রমণে এই অঞ্চলে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের জাগিরপাড়া এলাকায় ১৫-২০টি বন্যহাতির একটি দল কাঁচাপাকা ধান ক্ষেতে তান্ডব চালায়। পরে স্থানীয় লোকজন টর্চলাইট, লাঠিসোটা ও আগুনের মশাল জ¦ালিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্ঠায় পর হাতির পালটিকে তাড়াতে সক্ষম হয়। বর্তমানে কাঁচা-আধাপাকা ধানসহ বিভিন্ন ফসল নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে পাহাড়ি এলাকার মানুষ। কারণ, দিনের বেলায় হাতির পালটি পাহাড়ের টিলায় অবস্থান করলেও রাতে দলবেঁধে লোকালয়ে নেমে আসে। এরপর রাতভর চালায় তান্ডব, ক্ষতি করে ফসলের।

পাঁচগাঁও গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, প্রতি বছরই ধানের মৌসুমে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড় থেকে হাতির পাল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। দিনে পাহাড়ের টিলায় অবস্থান করে। রাতে নেমে এসে ফসলের মাঠে তান্ডব চালায়। জমির ফসল ও হাতির তান্ডব ঠেকাতে স্থানীয় লোকজন রাতে মশাল, টর্চলাইট ও লাঠিসোটা নিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

জাগিরপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল মিয়া বলেন, প্রতি মৌসুমেই হাতির পাল আমাদের ক্ষেতের ফসল খাইয়া যায়। এই হাতির অত্যাচার থেকে কবে আমরা মুক্তি পাব জানি না। এইবার ধান পাকার আগেই ক্ষেত নষ্ট করে দিয়ে গেল হাতির পাল। হাতির কবল থাকে আমরা রেহাই চাই। 

সুদীপ্ত হাজং বলেন, প্রতিবছরই স্থানীয় লোকজন শতচেষ্টা করেও কোনোভাবেই ঠেকাতে পাড়ছে না বুনো হাতির দলকে। এসব হাতি একবার যে ক্ষেত লক্ষ্য করে, তা বিনষ্ট করবেই। হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এই নেতা।

রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান খান পাঠান বলেন, সীমান্ত এলাকায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে হাতির আক্রমণ। হাতির তান্ডবে দিশেহারা এই অঞ্চলের মানুষ। প্রতি বছরেই ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে এসব বুনো হাতির পাল। দিনের বেলায় টিলায় থাকলেও রাত হলেই লোকালয়ে নেমে আসে। সীমান্তে হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। 

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।