আত্রাইয়ে তিল চাষে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে কৃষক
প্রকাশ | ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৫৬

নওগাঁর আত্রাইয়ে তিল চাষে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে কৃষকরা। এক সময় ব্যাপক হারে তিল চাষ হলেও বেশ কয়েক বছর থেকে তিল চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে কৃষক। তবে নতুন করে আবারও তিল চাষে ঝুঁকছে কৃষকরা।
কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতায় তিল চাষের সম্প্রসারণ ঘটানো হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫% বেশি। কম পানিতে চাষযোগ্য এবং উচ্চমূল্য পাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় কৃষকরা এই ফসলের দিকে ঝুঁকছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ৮ টি ইউনিয়নে ৫ হেক্টর জমিতে তিলের চাষ করা হয়েছে, যা আগামী দিনে আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
উপজেলার চকশিমলা গ্রামের স্থানীয় কৃষক মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, তিল চাষে তুলনামূলকভাবে কম খরচ ও কম পানির প্রয়োজন হয়, অথচ বাজারে এর দাম ভালো পাওয়া যায়। তিনি এবার ২ বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছেন এবং ভালো ফলনের আশা করছেন। তার মতো অনেক কৃষকই এখন তিল চাষকে লাভজনক বিকল্প হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, তিল শুধু অর্থকরী ফসলই নয়, এটি মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতেও সহায়ক। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, উন্নত বীজ সরবরাহ এবং আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা আরও দক্ষতার সাথে তিল চাষ করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, বাজারে তিলের স্থিতিশীল চাহিদা ও লাভজনক দাম কৃষকদের এই ফসল চাষে আগ্রহী করে তুলছে। কৃষি বিভাগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী মৌসুমে আরও বেশি জমিতে তিল চাষ সম্প্রসারণ করা হবে, যা কৃষকদের আয় বৃদ্ধি ও স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, কৃষকদের মধ্যে তিল চাষের সফলতা দেখে আশপাশের অন্যান্য উপজেলার চাষিরাও আগ্রহ প্রকাশ করছেন। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিলের চাষাবাদ সহজ এবং রোগ-পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় এটি কৃষকদের জন্য একটি নিরাপদ ও লাভজনক ফসল।
স্থানীয় বাজার মনিটরিং করে জানা গেছে, তিলের বর্তমান বাজারমূল্য প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা, যা কৃষকদের জন্য বেশ লাভজনক। কৃষকরা যদি উৎপাদন বাড়াতে পারেন, তাহলে বিদেশে রপ্তানিরও সুযোগ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহায়তায় আত্রাই উপজেলায় তিল চাষের এই সাফল্য অঞ্চলটিকে একটি মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। আগামী দিনে আরও বেশি কৃষক তিল চাষে এগিয়ে এলে এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।