ধর্ম যার যার বাংলাদেশটা হোক সবার : ডা. শফিকুর রহমান
প্রকাশ | ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:৩৯

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ধর্ম যার যার বাংলাদেশটা হোক সবার। এদেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সব ধর্মের বসবাস নিশ্চিত করতে চাই। সব ধর্মের মানুষ তাদের নিজস্ব আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চাই। এখানে সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু বলে কোন জিনিস নেই।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী গণসংযোগ পক্ষ পালন উপলক্ষে কুলাউড়ায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াত আমির বলেন, গত ৫ আগস্টের পরে হিন্দুদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পুজায় নাশকতার আশঙ্কায় আমাদের দলের কর্মীরা মন্দির পাহারা দিয়েছেন। সেটা কোন রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ছিলো না, নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে পাহারা দেওয়া হয়েছে। হিন্দু ভাইয়েরা যতদিন প্রয়োজন মনে করেছেন, আমাদের কর্মীরা ততদিন তাদের পাশে ছিলেন। কেন মসজিদ মন্দির পাহারা দিতে হবে? আগামীতে কোনরূপ পাহারা ছাড়াই আপনারা পূজা উদযাপন করবেন।
আগামীতে কোন জালিম যদি জুলুম করে তাহলে আপনারা প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করবেন। আপনাদের সাথে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে থাকবো। আল্লাহর ফায়সালা যদি হয় আর সরকারের দায়িত্ব পাই, তবে আপনাদের পাশে থাকবো। একজাতের ফুলে বাগান হয় না। বগুজাতের ফুল দিয়েই আমরা বাগান গড়বো।
ডা: শফিকুর রহমান আরও বলেন, আমরা প্রতিহিংসার কিংবা প্রতিশোধের রাজনীতি করি না। কারণ প্রতিহিংসার কিংবা প্রতিশোধ কখনও শান্তি বয়ে আনতে পারে না। কোন মানুষ যদি সহিংসতার শিকার হন, তাহলে প্রচলিত আইনের দ্বারস্থ হবেন। প্রচলিত আইনেই তার বিচার হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ গদি হারালে দেশে ৫-৬ লাখ আওয়ামী লীগ কর্মির মৃত্যু হবে। কিন্তু কোথায় কেউতো মারা গেলো না।
জামায়াতে ইসলামী এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ করবে শিক্ষাখাতে। প্রত্যেক সন্তানকে নিজের সন্তানের মতো দেখা হবে। একজন শিক্ষার্থীকে তার মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি তাকে কর্মউপযোগি করে গড়ে তোলা হবে। সমাজের সর্বত্র যে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে তা বন্ধ করে চুরি দূর্নীতি রোদ করার সর্বোচ্চ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
নিজ উপজেলা কুলাউড়া নিয়ে জামায়াতের আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেন, আমি সারাদেশে একটা দায়িত্ব নিয়েছি। কুলাউড়া আমার জন্মভুমি। কুলাউড়ার প্রতি বিশেষ দূর্বলতা আছে। নিজ উপজেলার জন্য সর্বোচ্চটুকু করার চেষ্টা করবো। তবে অন্যস্থানের হক এনে কুলাউড়ার জন্য বিশেষ কিছু করার ক্ষমতা আমার নেই।
কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মো. আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন, কুলাউড়া উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা: অরুনাভ দে, হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের আহবায়ক রজত কান্তি ভট্রাচার্য্য, কুলাউড়া সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সৌম্য প্রদীপ ভট্রাচার্য্য সজল, পুজা উদযাপন কমিটির সেক্রেটারি অজয় দাস, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামির আলী, জেলা পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি তাজুল ইসলাস ও রাজানুর রহিম ইফতেখার প্রমুখ।
এছাড়াও জামায়াতের আমির ডা: শফিকুর রহমান একইদিন সকাল ১০টায় উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ বাজারে এবং বেলা ২ টায় জুড়ি নাইট চৌমুহনীতে পৃথক দাওয়াতী সভায় বক্তব্য দিয়েছেন।
যাযাদি/ এসএম