লাকসামে মাদরাসা ছাত্রী সামিয়া হত্যা নিয়ে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশ | ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:০৫

কুমিল্লার লাকসামে ইক্বরা মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রী সামিয়া হত্যাকান্ডে সন্দেহভাজন মাদ্রাসা সুপার জামাল উদ্দিনসহ ৩ জনকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে লাকসাম প্রেস ক্লাবে পরিবারের পক্ষ থেকে এক সাংবাদ সম্মলনে এ দাবি জানান সামিয়ার মা শারমিন বেগম। আগেরদিন রোববার (২৭ এপ্রিল) রাতে সামিয়াকে হত্যার অভিযোগ এনে তিনি লাকসাম থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন। এজাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা।
সংবাদ সম্মেলনে সামিয়ার মা শারমিন বেগম অভিযোগ করে বলেন, সামিয়া ৫ম তলা থেকে ঝাপ দিয়ে নিচে পড়ে মারা গেছে বলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অপপ্রচার চালালেও তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মাদ্রাসা সুপার জামাল উদ্দিন, শিক্ষক শারমিন ও দারোয়ান খলিলকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটন হবে।
এদিকে, সামিয়ার মৃত্যুর সংবাদ শুনে বাবা নিজাম উদ্দিন শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন। তিনি সামিয়াকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি জানিয়ে দ্রুত হত্যাকান্ডে বিচার চেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লাকসাম প্রেস ক্লাব ও লাকসাম সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সামিয়ার মা শারমিন বেগম আরও বলেন, আমার মেয়েকে গত ১০ মার্চ লাকসাম ইক্বরা মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়। ভর্তির একমাস পর আমার বড় বোন গত ১৩ এপ্রিল সামিয়াকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে ফেরত নিতে গেলে মাদ্রাসা সুপার জামাল উদ্দিন আমার বোন ও সামিয়াকে ধমক দেয়। এসময় দারোয়ান ধাক্কা দিয়ে আমার বোনকে বের করে দেয় এবং শিক্ষক শারমিন আমার মেয়ে সামিয়াকে টেনে-হিছড়ে মাদ্রাসার উপরে নিয়ে যায়। এসময় দুর থেকে সামিয়ার আর্তচিৎকার শুনতে পায় আমার বোন।
তিনি বলেন, এ ঘটনার তিন দিন পর বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) গভীর রাতে মাদ্রাসা থেকে ফোন করে আমাদেরকে লাকসাম আসতে বলে। লাকসাম আসলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানান, সামিয়া মাদ্রাসার পাঁচ তলা ভবনের জানালার ফাঁক দিয়ে ঝাপ দিয়ে নিচে পড়েছে। পরেদিন শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে সামিয়া ঢাকার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
তিনি জানান, সামিয়া মারা যাওয়ার পূর্বে কালো বোরকা পরিহিত কেউ তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে বলে আমাদেরকে বলে গেছে। তাই এটি নিশ্চিত একটি হত্যাকান্ড। এই বিষয়ে মামলা করতে গেলে লাকসাম থানা পুলিশ অপমৃত্যু মামলা নেয়। সর্বশেষ বিভিন্ন নাটকীয়তার পর গতকাল রাতে (২৭ এপ্রিল) পুলিশ মামলা নিয়েছেন।