মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরু, উদ্বেগে খানসামার খামারিরা

মো. নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:২৭
লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরু, উদ্বেগে খানসামার খামারিরা
ছবি: যায়যায়দিন

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় গবাদিপশুর মধ্যে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ও চর্মরোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাসজনিত এই সংক্রামক রোগে প্রতিদিনই নতুন গরু আক্রান্ত হচ্ছে। যদিও এখন পর্যন্ত মৃত্যুর কোনো খবর পাওয়া যায়নি, তবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক উদ্বেগে রয়েছেন খামারি ও গৃহস্থরা।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার প্রায় সব এলাকাতেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। তবে গোয়ালডিহি ও ছাতিয়ানগড় এলাকায় আক্রান্ত গরুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। প্রায় অর্ধশতাধিক গরুতে এলএসডির উপসর্গ দেখা গেছে। এর মধ্যে অল্প বয়সী ও সংকর জাতের গরু বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

আক্রান্ত গরুর শরীরে চামড়ার ওপর গুটি গুটি ফোলা, জ্বর, মুখ ও নাক দিয়ে লালারস ঝরার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। রোগের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। নিরুপায় হয়ে স্থানীয় পশু চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হচ্ছেন ছোট-বড় খামারিরা।

গোয়ালডিহি গ্রামের গরু খামারি আশরাফ আলী বলেন, ৪-৫ দিন আগে আমার দুই বছরের এঁড়ে বাছুর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার শরীরে ঘা হচ্ছে, ঠিকমতো খেতে পারছে না। প্রতিদিন ওষুধ দিতে হচ্ছে, খরচ বাড়ছে। আশপাশেও একই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। গরুগুলো কষ্ট পাচ্ছে, দুশ্চিন্তায় আছি।

অপরদিকে দিনমজুর সাজেদুর রহমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, অভাবের সংসারে কাজ করে একটু একটু করে টাকা জমিয়ে একটা গরু কিনেছিলাম। এখন সেই গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসায় এরই মধ্যে ২-৩ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। যদি সরকারিভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হতো, এতটা বিপদে পড়তে হতো না।

স্থানীয় এআই টেকনিশিয়ান মো. আমিনুর রহমান বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন গড়ে ৪-৫টা গরু চিকিৎসা দিচ্ছি। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ২-৩ বছর বয়সী বা সংকর জাতের গরু। জ্বর, শরীরে গুটি আর খাওয়া বন্ধ এই উপসর্গগুলো দেখা যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ইনজেকশন ও ব্যাথার ওষুধ দিচ্ছি এবং খামারিদের প্রয়োজনীয় সকল পরামর্শ দিচ্ছি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রতন কুমার রায় জানান, চলমান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সেই সাথে এলএসডি রোগ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, প্রচার, চিকিৎসা এবং টিকাদান কার্যক্রম চলছে। এখনো কোনো গবাদিপশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি, তবুও খামারিদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

খামারিরা জানান, এভাবে রোগ ছড়াতে থাকলে তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে