জীবনের জীবন বাঁচাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে স্কুলের বন্ধুরা   

প্রকাশ | ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৮

কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

বন্ধুর জন্য বন্ধুর আত্মত্যাগ বা উপকারের কথা পৃথিবীর শুরু থেকে শুনে আসছি আমরা। আর এবার প্রকৃত বন্ধুত্বের প্রমাণ দিলেন তার স্কুল কলেজ পড়ুয়া বন্ধু মোস্তাক মুজাহিদ সহ কয়েকজন। 

জীবনকৃষ্ণ  রায় ‘গত ৩ মাস আগে হঠাৎ ওর মেরুদণ্ডে একটা মারাত্মক টিউমার ধরা পরে। এরপর টানা চিকিৎসায় তার বাবা মা ঢাকার একটি হাসপাতাল নিয়ে গিয়ে কমরের টিউমার অপারেশন করিয়ে বাড়িতে আসলে ধীরে ধীরে সেটি আরো বড় আকারে ধারণ করে, একপর্যায়ে তার হাঁটা চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায়, টানা তিন মাস থেকে সে  বিছানায় কাতরাচ্ছে । যতটুকু টাকা জীবনের বাবা-মায়ের ছিলো, তা ব্যয় হয়ে গেছে। এদিকে প্রচণ্ড অর্থ সংকটে তার চিকিৎসা করার মত উপায় নেই এখন। তার সংকটাপন্ন অবস্থায় তার চিকিৎসার অর্থ যোগানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে । 

চিকিৎসকরা জানান, রোগীর জীবন বাঁচাতে ইন্ডিয়াতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ইন্ডিয়াতে চিকিৎসার জন্য ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার অর্থের দরকার। এমন পরিস্থিতিতে তাকে বাঁচাতে স্কুল কলেজ পড়ুয়া বন্ধুরা হাতে সহযোগিতার দান বক্স  নিয়ে নেমেছে রাস্তায় বিভিন্ন হাট-বাজার দোকানে ঘুরে ঘুরে তুলছে টাকা তার বন্ধুরা। 

ক্লাসনোট হোক কিংবা কোনো জটিল বিষয়ে পরামর্শ, ছোট-বড় যেকোনো প্রয়োজনে আমরা সবার আগে ছুটে যাই বন্ধুর কাছে। শৈশব থেকে বার্ধক্য -এই দীর্ঘ যাত্রায় আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বন্ধু। জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে নতুন বন্ধু হয়, আবার কখনো যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে। বন্ধুত্ব ছাড়া বাঁচা কঠিন, তা তো সবাই বুঝি। তবে শুধু তা-ই নয়, গবেষণা বলছে, বন্ধুত্বই হতে পারে দীর্ঘায়ুর অন্যতম উপাদান।

সুস্থ থাকতে আমরা অনেকেই নিয়মিত ব্যায়াম করি। শরীর সুস্থ রাখতে ব্যায়াম করা যেমন প্রয়োজন, তেমন প্রয়োজন বন্ধুত্বের। সম্পর্কের এই সমীকরণ প্রমাণ করেছেন বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক ডেভিড রবসন।

আপনার একটু সদয় সহানুভূতি ফিরিয়ে দিতে পারে  টিউমার রোগে আক্রান্ত  ও  মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত জীবন কুমার রায় (৩০)। লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের (উত্তর ঘনশ্যাম ) এলাকার দিন মজুর শৈলেন চন্দ্র রায়ের ছেলে এবং সে সরকারি করিম পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এর  ইন্টারপড়ুয়া একজন ছাত্র। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৬ মাস আগ থেকে জীবন কৃষ্ণ রায়ের শরীরে বীজ বুনেছে কোমরের টিউমার ও ক্যান্সার। 

কোমরের টিউমার অপারেশনের তিন মাস পরেই ধরা পড়ে মরণব্যাধি এ ক্যান্সারের জোড়াতালি দেয়া চিকিৎসায় চলছে তার জীবন।  তার বাবা শৈলেন চন্দ্র রায় জানান, ছেলের রোগ ধরা পড়ার পর একমাত্র সম্বল ব্যাটারিচালিত (অটোরিকশা) বিক্রি করে চিকিৎসায় ব্যয় করা হয়। এতেও সংকুলান না হওয়ায় ঋণ করা হয়েছে আরো দুই লাখ টাকা। 

তিনি আরো জানান, এতো টাকা খরচ করার পরও কাজের কাজ কিছু হয়নি। চিকিৎসক বলেছেন, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য  ভারতে নিতে হবে। এতে প্রায় ৮ লাখ থেকে ১০ টাকা খরচ হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকার বিডিএম হসপিটালের চিকিৎসক। কিন্তু দরিদ্র শৈলেন চন্দ্র এতো টাকার সংস্থান করা সম্ভব নয়। তাই অসুস্থ সন্তানের মলিন মুখ দেখে নিরবে অশ্রু ফেলছেন বাবা-মা।

তার স্কুলপড়ুয়া বন্ধু মোস্তাক মুজাহিদ বলেন, জীবন কৃষ্ণ রায় আমার স্কুল জীবনের বন্ধু। দীর্ঘদিন একসাথে মাঠে খেলেছি। হঠাৎ আজ থেকে ৬ মাস আগে তার মেরুদণ্ডর ব্যথা অনুভব করে। এরপর ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পুরো দুটো পা অবশ হয়ে যায়। এমতবস্থায় তার কমরের টিউমার অপারেশন করা হয়। এতে আরো ধীরে ধীরে সে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে, একপর্যায়ে ডাক্তার কি আবার দেখালে, তার শরীরে মরণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে। 

তার বন্ধু মোস্তাক মুজাহিদ সমাজের সকল বিত্তবান  মানুষের কাছে উন্নত চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন তার বন্ধুর জন্য। 

ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার: 2221101264153, পূবালি ব্যাংক PLC, (জীবনের বাবার) বিকাশ/নগদ (পারসোনাল): 01840762661 (জীবনের নাম্বার)

যাযাদি/ এসএম