চট্টগ্রামের শীর্ষ ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ‘বুড়ির নাতি’কে জেলার হাটহাজারী থানার একটি হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহারের আদালত পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ জানান, গত বছরের ২৯ আগস্ট ডাবল মার্ডারের একটি ঘটনা ঘটেছিল। যার মধ্যে একটি পড়েছে হাটহাজারীতে। ওই ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় সাজ্জাদের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গত বছরের ২৮ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরীর অনন্যা আবাসিক এলাকা সংলগ্ন অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে দুই যুবককে গুলি করা হয়। নিহতরা হলেন- মাসুদ কায়সার ও মো. আনিস। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, নগরীর অনন্যা আবাসিক এলাকায় নাহার কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দিয়ে দুজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলে আসা দুষ্কৃতকারীর ছোঁড়া গুলিতে আনিস ঘটনাস্থলে মারা যান। কায়সার দৌঁড়ে কিছুদূর যাবার পর মোটরসাইকেল নিয়ে তাকে ধাওয়া করে ধরে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় কায়সারকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মাসুদ কায়সারকে যেখানে গুলি করে খুন করা হয়েছে, সেটি নগরীর শেষপ্রান্ত পেরিয়ে হাটহাজারী উপজেলার কুয়াইশ এলাকা। এজন্য তার ভাই মো. আরিফ বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন। মামলায় ছোট সাজ্জাদসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। এতে পূর্বশত্রুতার জেরে তাকে খুনের কথা উল্লেখ করা হয়।
ছোট সাজ্জাদ বায়েজিদ বোস্তামী থানার হাটহাজারীর শিকারপুরের মো. জামালের ছেলে। তার বিরুদ্ধে একাধিক ডাবল মার্ডার, অস্ত্র, চাঁদাবাজির ১৫টিরও বেশি মামলা রয়েছে।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন এলাকায় সাজ্জাদকে ধরতে অভিযানে যায় বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশ। ওই সময় গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পালিয়ে যান তিনি। এতে পুলিশসহ পাঁচজন আহত হন। পরে একই থানার ওসিকে ফেসবুক লাইভে এসে পেটানোর হুমকি দেন তিনি। এরপর চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেন নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ।
গত ১৫ মার্চ দিবাগত রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি থেকে সাজ্জাদকে পুলিশে দেওয়া হয়।
সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। গত ৩০ মার্চ নগরের বাকলিয়া অ্যাকসেস রোড এলাকায় একটি প্রাইভেট কারকে ধাওয়া দিয়ে গুলি করে ঝাঁঝরা করা হয়। এতে দুই আরোহী নিহত হন। সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন ও সাজ্জাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের ধারণা। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ার জেরে তার অনুসারীরা সরোয়ারের সহযোগীদের ওপর হামলা চালান বলে ধারণা করছে পুলিশ।
যাযাদি/ এম