সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

মাদারীপুরে বিআরটিএ অফিসে ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবস্থান কর্মসুচি

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর
  ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৪৭
মাদারীপুরে বিআরটিএ অফিসে ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবস্থান কর্মসুচি
ছবি: যায়যায়দিন

মাদারীপুরে বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সীমাহীন ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে পূর্ব ঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা।

রবিবার বেলা ১১টার দিকে বিআরটিএ অফিসের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় অফিসে ইব্রাহিম নামে একজন পিওন ছাড়া আর কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পাওয়া যায়নি। অনেক সেবা প্রত্যাশী সেবা নিতে আসেন, কিন্তু অফিসে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকায় তাদেরকে ফিরে যেতে হয়েছে। অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে তারা নানা ¯স্লোগানে স্লোগানে এলাকা মুখরিত করে তোলেন।

ছাত্র নেতারা বিআরটিএ অফিসে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে স্লোগান তুলে বলেন, ‘দুর্নীতি বাজদের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও, মাদারীপুরের মাটিতে দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই নাই, হৈ হৈ রৈ রৈ দুর্নীতিবাজরা গেলো কই? রবিবার ছুটি নাই, কেন তারা অফিসে নাই?

মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ বলেন,“যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবী, বিআরটি এর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাদারীপুর থেকে অপসারণ না করা পর্যন্ত, ততদিন আমাদের নানা কর্মসূচি চলমান থাকবে। আমরা কিন্তু এর আগেও বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। ২৪ এর ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের জন্য রাজপথে ছিলাম তারা কিন্তু বিদায় নিয়েছে। আপনাদেরও বিদায় করে ছাড়বো।”

টিআইবির ইয়েস দলনেতা কামরুল হাসান বলেন, ‘আমরা জুলাই আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতনে বাধ্য করেছে, দূর্নীতিবাজদেরকে সাবধান করে বলতে চাই আপনাদের কালো হাত ভেঙে দিতে আমাদের একটু সময়ও লাগবে না। আমরা মানববন্ধন করে তিন কার্যদিবসের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম বিআরটিএর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণের জন্য। আমরা কর্তৃপক্ষের দিকে তাকিয়ে ছিলাম তারা ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু ব্যবস্থা না নেওয়ায় সময় পার হয়ে যাওয়ায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ অবস্থান কর্মসুচি পালন করছি। এখানে এসে দেখি ফ্যাসিস্ট সরকারের মতো দূর্নীতিবাজরা অফিস থেকে পালিয়ে গেছে। দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”

এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক আকাশ মাতুব্বর, সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিব ইখতিয়ার আহমেদ সাবিদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য-সংগঠক আবদুর রহিম, মুখপাত্র তুষার সব্যসাচী, সহ-মুখপাত্র জুবায়ের আহমেদ নাফিসহ অন্যরা।

অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসকের অফিসে গিয়ে তাকে বিষয়টি অবহিত করেন। এসময় জেলা প্রশাসক মোছা: ইয়াসমিন আক্তার ছাত্রদের আশ্বস্থ করে বলেন, “আমি তিন দিন ছিলাম না। আজকে জানতে পেরেছি আপনারা স্মারকলিপি দিয়েছেন। স্মারকলিপিটি আমি কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দিবো।”

উল্লেখ্য, ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে তারা দুর্নীতিবাজদের অপসারণ দাবীতে গত ১৭ এপ্রিল বিকেলে এক মানববন্ধনে তারা তিনদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন।

বিআরটিএ অফিসের দুর্নীতিবাজদের অপসারণ না করা হলে বিআরটিএ অফিস ঘেরাওসহ বৃহত্তর আন্দোলনেরও হুশিয়ারি দেন তারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতা-কর্মীরা বলেন, ‘আমরা মানববন্ধন থেকে কর্মসূচি দিয়ে অপেক্ষা করছিলাম। সময় পার হয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ তাদের অপসারণ করেন নাই। তাই আমরা আমাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।’

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে