সাতক্ষীরার উপকূলের শ্যামনগর উপজেলায় নদী রক্ষা বেড়ী বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। বর্তমানে রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা চলছে।
উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সিংহড়তলী গ্রামে চুনকুড়ি নদীর বেড়ী বাঁধে হঠাৎ করে এ ফাটল দেখা দেয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বেড়ী বাঁধে হঠাৎ ফাটল দেখা দেওয়ায় এলাকাবাসী চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে মুন্সিগঞ্জ ইউপির সাত থেকে আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে সম্পদ নষ্ট হতে পারে বলে এলাকাবাসী জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহরাব হোসেন বলেন হরিনগর এলাকায় সিংহড়তলী গ্রামের অবিনাশ মন্ডলের বাড়ীর সামনে ২৬ এপ্রিল সকালে চুনকুড়ি নদীর বেড়ী বাঁধে ৩০ থেকে ৩৫ মিটার জুড়ে হঠাৎ ফাটল দেখা দেয়। দুপুরের পর থেকে ফাটলটি আরও বড় আকার ধারণ করতে থাকে। এ অবস্থায় এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হতে থাকে। জররুী ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কার করা না হলে যে কোন মুহুর্তে বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
মুন্সিগঞ্জ ইউপি সদস্য নিপা চক্রবর্তী, সিরাজুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা বলেন বেড়ী বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে মুন্সিগঞ্জ ইউপির সিংহড়তলী, হরিনগর, হেতালখালী, চুনকুড়ী, মিরগাং, ছোটভেটখালী, বড়ভেটখালী, সুন্দরবনবাজার, পাশের্^খালী সহ পাশ^বর্তী ইউনিয়ন রমজাননগরের কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়ে সম্পদের ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে এই এলাকায় শত শত চিংড়ী ঘের, বোরো ধানের জমি, চিংড়ী ও কাঁকড়ার কয়েকটি হ্যাচারী, কাঁকড়া মোটা তাজাকরণ ঘের, মিষ্টি পানির পুকুর, ক্ষেতের সবজি সহ কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতি গ্রস্থ হবে।
ভাঙ্গনের সম্মুখের বাসিন্দা অবিনাশ মন্ডল, জগদীশ মন্ডল বলেন সকালে বেড়ী বাঁধে ফাটল দেখে দিশেহারা হয়ে যাই। যে কোন মুহুর্তে ভেঙ্গে গেলে আগেই তাদের বাড়ী ঘর পানিতে তলিয়ে যাবে। সাথে সাথে তারা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যবৃন্দের অবহিত করেন।
এদিকে মুন্সিগঞ্জ ইউপির সিংহড়তলী নদী রক্ষা বাঁধের ভাঙ্গনের কথা শুনে শনিবার শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা ঃ রণী খাতুন, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আব্দুল্লাহ আল রিফাত ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার প্রিন্সরেজা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় মুন্সিগঞ্জ ইউপির জনপ্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বেড়ী বাঁধ পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রণী খাতুন বলেন ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বে থাকা এসওকে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। তারা খবর পেয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। দ্রæত সমাধান হয়ে যাবে। তিনি এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে বাঁধ সংস্কার কার্যক্রমে সহায়তা করার আহব্বান জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও প্রিন্সরেজা বলেন চুনকুড়ি নদীর বেড়ী বাঁধে ফাটলের কথা শুনে এলাকা পরিদর্শন করে সাথে সাথে জি আই বস্তা, বালিভর্তি বস্তা ভাঙ্গনে দেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া পাশর্^দিয়ে রিং বাঁধ দিয়ে পানি যাতে লোকালয়ে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে কাজ চলছে। ভাঙ্গন রক্ষায় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রæত সমাধান হবে।
এলাকাবাসী জানান, ভাঙ্গন দেখে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যবৃন্দ, পানি উন্নয়নবোর্ড কর্মকর্তাবৃন্দকে জানান তারা দ্রæত কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আশা করা যায় সংস্কার কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হবে।
যাযাদি/ এম