নেত্রকোণার পূর্বধলায় ইটভাটা নির্মানে বাঁধা, মোটা অংকের চাঁদা দাবাী, না দেয়ায় প্রকাশ্যে দিবালোকে ইট লুটের অভিযোগের ঘটনায় প্রায় ৮ বছর পর আদালতে মামলা করেছে মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার নামে এক ব্যবসায়ী।
মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এমপি ও পুর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলাম সুজন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান, সাংবাদিক, শিক্ষক ও পুলিশসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ৪৮ নেতাকর্মীর নাম রয়েছে।
এছাড়া আপরিচিত ৪০/৫০জন এ ঘটনায় জড়িত রয়েছেন বলে মামলা উল্লেখ করা হয়। গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) নেত্রকোণা বিজ্ঞ দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটি করেন উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের সাবেক প্রয়াত চেয়ারম্যান আব্দুল গণি তালুকদাদের ছেলে মানুষউড়া গ্রামের মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, গত ২০১৭ সালে নজরুল ইসলাম প্রায় কোটি টাকা খরচ করে মানুষউড়া গ্রামের ফজলুল হক তালুকদারের বাড়ির পাশে একটি ইট ভাটা তৈরীর প্রস্তুতি নেন। এ জন্য তিনি ৫ লক্ষ ইট এনে রাস্তার পাশে রাখেন। খবর পেয়ে উপজেলার সাবেক এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল অন্যান্য আসামীদের নিয়ে ইট ভাটা তৈরীতে বাধা দেন। এ সময় ইটখলা তৈরি করতে হলে তাকে ৫০লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে।
অন্যথায় ইটখলা তৈরি করতে দিবে না। নজরুল ইসলাম চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে এমপি ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্বধলা থানার পুলিশ ও তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গত ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর সকালে ইটখলায় গিয়ে নজরুল ইসলামকে ঘেরাও করে। এসময় এমপি বেলালের হাতে থাকা রিভালবার, সন্ত্রাসী বাহিনীর রামদা, কিরিচ, ছোরা প্রদর্শন করে নজরুল ইসলাম ও তার পরিবারকে ভয় ভীতি দেখিয়ে জনসম্মুখে পাঁচ লক্ষ ইট লুট করে দিনভর ট্রাকে ও হেনট্রলি দিয়ে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ৫০ লক্ষ টাকা হবে বলে উল্লেখ করেন।
নজরুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন, পূর্বধলা থানার সাবেক ওসি অভিরঞ্জন দেব, থানার পুলিশ, জারিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাজেদা খাতুন, এমপির দুই ঘনিষ্ট সহচর ফেরদৌস, কামরুজ্জামান উজ্জ্বল, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মাসুদ আলম টিপু, আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াসিম সিং, নূরুল আমিন, সেলিম জাহাঙ্গীর, সাংবাদিক ওয়াদুদ, যুবলীগ নেতা ইসলাম উদ্দিনসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তার ওই ইট লুটপাট করেছে।
তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বাধা ও প্রতিবাদ করার সাহস পাননি তিনি। এর আগে একাধিকবার চেষ্টা করেও আইনগত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়ে এখন দীর্ঘদিন পর মামলা করেছি।
বাদীর আইনজীবি রফিকুল ইসলাম খান জুয়েল সাংবাদিকদের জানান, মামলাটি দায়েরের পর বিজ্ঞ বিচারক আশরাফুন্নাহার ঘটনার তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পূর্বধলা থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
পুর্বধলা থানার আফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নূরুল আলম বলেন, মামলাটির বিষয়ে শুনেছি কিন্তু এ বিষয়ে পুর্বধলা থানায় কোন কাগজপত্র আসেনি।
যাযাদি/ এম