শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেন: ফখরুল 

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
  ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৪১
নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেন: ফখরুল 
ছবি: যায়যায়দিন

নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ ও রেগুলেটর নির্মাণে বিলম্ব হলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও’র হুমকী দিয়েছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং মেট্রো হোমসের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফখরুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার পরও এ এলাকায় বালু দস্যুতা বন্ধ হয়নি। আমাদের দলের এক শ্রেণির দূর্বৃত্ত এখন অবাধে বালু তুলে নদী ভাঙন বৃদ্ধি করেছে। আমি বিএনপির হাই কমান্ডের কাছে অনুরোধ করবো, আমাদের দলের যারা এ বালু সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিন।

বালু খেকোদের লালসার শিকার মুছাপুর রেগুলেটর। এরপাশ থেকে বালু খেকো সিন্ডিকেটের বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলনের কারনে রেগুলেটরটি গত বছর বন্যার পানির তোড়ে তলিয়ে যায়। এতে কুমিল্লা, ফেনী ও নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত।

নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে কোম্পানীগঞ্জ উপকূলবাসী। বর্ষা আসছে, নদী ভাঙ্গনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়া হলে কোম্পানীগঞ্জবাসীকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করবো।

শুক্রবার বিকেলে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গন কবলিত জনতা বাজার এলাকায় নদী ভাঙ্গনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে বেশ কয়েকটি সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় ভয়াবহ ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধনে অংশ নেয় এলাকাবাসী। তাদের দাবি, দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়া হলে তারা আত্মহুতি দেবেন।

ফখরুল ইসলাম বলেন, এখানে কাউয়া কাদেরের প্রশ্রয়ে তার ভাই কাদের মির্জা তার নিকটাত্মীয় ভাগ্নেদের দিয়ে খাল দখল করে মির্জানগর, রাহাত নগর, শাহাদাত নগর গড়ে তুলেছিল। শত শত একর খাস জমি দখল করে মৎস্য, কৃষি খামার গড়ে তুলেছে। সেগুলোতে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি জবর দখল করে রাখার অভিযোগ রয়েছে। তাদের লোকজন পানি নিষ্কাশনের পথরুদ্ধ করায় এবং শত-হাজার কোটি টাকার বালু উত্তোলন করায়দুর্বৃত্তদের মানুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগে মুছাপুর রেগুলেটর ধ্বংশ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নোয়াখালীর সাবেক ডিসি দেওয়ান মাহবুবুর রহমানসহ প্রশাসনের লোকজন বালু ও মাটি খেকোদের কাছ থেকে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নিয়ে জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডে সহায়তা করেছিল। ফখরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপির দলীয় সাইনবোর্ড ব্যবহার করে যারা বর্তমানে অবৈধ বালু ব্যবসা, কৃষি জমির মাটি লুটসহ নানা অনিয়ম করে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে তাদেরকে দল থেকে বহিস্কার করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

এসময় মুছাপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি হাজী ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সোনাগাজী উপজেলা বিএনপি নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুল হক, সদস্য আফতাব আহমেদ, একরামুল হক মিলন, হারুনুর রশীদ ভুঁইয়া, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান টিপু, গোলাম হায়দার শাহীন, বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব নুর উদ্দিন ফাহাদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাছের মেম্বার, জসিম মেম্বার, উপজেলা জিয়া মঞ্চের আহ্বায়ক নুর নবী আহমেদসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী কাফনের কাপড় পরে সাহাব উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাড়িঘর ফসলি জমি হারিয়ে আমি কাপনের কাপড় পরে ফেলেছি। আমার বেঁচে থাকার আর স্বাধ নেই। সরকার যদি আমাদের দিকে নজর না দেয় পরিবারসহ আমরা আত্মাহুতি দেব।‘ এসময় তার সঙ্গে কাফনের কাপড় পরা অনেকে নদী ভাঙন রক্ষায় সরকারের পদক্ষেপের দাবি জানান।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে