মানুষের বাড়িতে আশ্রিত থেকে দিনমজুরী কাজ করে জীবন যাপন করছি। জীবনে কোনদিন নিজের এক টুকরো ভিঠে এবং একটি বসতঘর হবে এমনটি কল্পনা করতে পারেনি। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় আমার বিদেশি ভাইদের সহযোগিতায় আজ আমি ভিঠাবাড়ির মালিক হয়েছি। আমার এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। এভাবেই কথাগুলো বললেন প্রবাসী সংগঠন ‘ফ্রেন্ডস ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল’র উদ্যোগে তৈরি করে দেয়া নতুন ঘরের মালিক কনা মিয়া। গতকাল শুক্রবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ঘরটি হস্তান্তর করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং শিক্ষক ও সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন গোয়ালাবাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামছুল হক।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ওসমানীনগর সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি রেজওয়ানুর রহমান চৌধুরী, উপজেলা সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা মশিউর রহমান, ওসমানীনগর ইসলামি সমাজ কল্যাণ পরিষদের সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম শাজান, পল্লি চিকিৎসক সেবুল মিয়া, ব্যবসায়ি অজিত কুমার দেব, সমাজসেবি সেবুল মিয়া, সৈয়দ জুয়েল আহমদ, আখতার হোসেন প্রমূখ। অনুষ্ঠানে দোয়া পরিচালনা করেন হাফিজ আব্দুল কাদির। জানা যায়, জহিরপুর গ্রামের কনা মিয়ার কোন ভিঠেমাটি না থাকায় স্ত্রী ও এক ছেলেসহ নিয়ে মানুষের বাড়িতে আশ্রিত থেকে দিনমজুরের কাজ করে জীবনযাপন করে আসছিলেন । বিষয়টি জানতে পেরে তাকে একটি ঘর তৈরি করে দেয়ার উদ্যোগ নেয় ফ্রেন্ডস ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল। ঘর তৈরির জন্য কিছু ভূমির প্রয়োজন হলে স্থানীয় হাজী ছুবা মিয়া ঘর তৈরির জন্য কণা মিয়াকে কিছু ভূমি দান করেন। এরপর দানকৃত সেই ভূমিতে একটি টিনসেডের পাকাঘর তৈরি করে দেয় সংগটনটি। এছাড়াও সংগটনের সদস্য সানাওর আলীর উদ্যোগে একটি গভীর নলকুপ স্থাপন করে দেয়া হয় কণা মিয়াসহ আশপাশের পরিবার গুলোর বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করার জন্য।
সংগঠনের সদস্য সানাওর আলী বলেন, আমরা যারা মঙ্গলচন্ডী নিশিকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তাম তার মধ্যে অনেকেই আমরা যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছি। সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা ২০১৯ সালে সংগটনটি গঠন করি। এখন পর্যন্ত ৬টি ঘর তৈরি করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এতিমখানায় আর্থিক অনুদানসহ চিকিৎসা ও বিয়ের জন্য অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
সংগঠনটির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী উপজেলার ভাড়েরা গ্রামের মো, সোহেব আহমদ, রাউতখাই গ্রামের মো. দিলাল মিয়া, দিঘর গয়াসপুরের মো. হিরণ মিয়া, মোল্লাপাড়া গ্রামের মো. হারুন রশিদ, ইলাশপুর গ্রামের মো. মিনার আবদিন, উসমানপুর গ্রামের সৈয়দ ইমরান আহমদ, গ্রামতলা গ্রামের মো. সানাওর আলী, উসমানপুর গ্রামের সৈয়দ সাইফুল ইসলাম, লামাপাড়া গ্রামের মো. ফখরুল চৌধুরী, পাচপাড়া গ্রামের শাহ আপাফাতুর রহমান, দশহাল গ্রামের মো. আব্দুল মালিক, কামিনিকান্দি গ্রামের মো. মোঃ আব্দুস শহিদ, গোয়ালাবাজারের মো. শাহেদ মিয়া সফা, ইলাশপুর গ্রামের মো. সাখওয়াত হোসেন লিভলু, রাউথখাই গ্রামের মো. আব্দুল হাকিম জিলু, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী গোয়ালাবাজারের মো. হেলিম চৌধুরী, দুরাজপুর গ্রামের মো. হাকিম বাদশা এবং পাচপাড়া গ্রামের শাহেদা নাজমা রুনি।
যাযাদি/ এসএম