শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

পাবনায় জেলা পরিষদের জমির দখল নিয়ে উত্তেজনা

পাবনা প্রতিনিধি
  ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:০২
পাবনায় জেলা পরিষদের জমির দখল নিয়ে উত্তেজনা
ছবি: যায়যায়দিন

পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের বাবুর বাগান সংলগ্ন জেলা পরিষদের একটি খেলার মাঠ দখল নিয়ে উত্তেজনা চলছে। স্থানীয়দের দাবি- জাল দলিল তৈরি করে এবং মামলা করে পাবনা জেলা পরিষদের জায়গা দখলের চেষ্টা করছে একটি পক্ষ। জমিটি খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। জমি নিয়ে মামলা ও আদালতে রায় হয়ে গেলেও এবিষয়ে কিছুই জানে না জমির মালিক পাবনা জেলা পরিষদ। সম্প্রতি নজরে আসলে এনিয়ে সুপ্রীম কোর্টে আবেদনের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পরিষদ।

জানা গেছে, বাবুর বাগান সংলগ্ন রাজাপুর মৌজার ২নং খতিয়ানের এসএ-১১১ এবং আরএস ১১৯ দাগের একটি পতিত জমি রয়েছে। জমিটি জেলা পরিষদের জায়গা হিসেবে পরিচিত, এজন্য স্থানীয়রা খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করেন। সম্প্রতি পাশের টিকরি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আফজার হোসেন গং খেলার মাঠটি দখল করতে আসেন এবং তারা দাবি- করেন জমিটি তারা আদালতের মাধ্যমে পেয়েছেন। এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিলে তারা জেলা পরিষদের শরণাপন্ন হোন। এসময় জেলা পরিষদ খোঁজখবর নিয়ে মামলার বিষয়টি জানতে পারেন।

তাশ বিশ্বাস, মেহেদী হাসান এবং বিপ্লব বিশ্বাসসহ কয়েকজন স্থানীয় জানান, জায়গাটি মুক্তা সুন্দরী নামে এক হিন্দু লোকের সম্পত্তি ছিল। দেশভাগের সময় ভারতে চলে যান। এরপর জমিটি জেলা পরিষদের নামে আরএস এবং এসএ রেকর্ডভুক্ত হয়। কিন্তু পাশের টিকরি গ্রামের আবুল হোসেন জাল দলিল তৈরি করে ওই জমিসহ পাশের আর কিছু জমি নিয়ে নিম্ন আদালতে মামলা করেন। সেই মামলা খারিজ হলে আবারও মামলা করেন এবং আবুল হোসেন ডিগ্রীপ্রাপ্ত হোন। পরে বিবাদীরা হাইকোর্টে আপিল করলেও আপিল খারিজ হয়ে যায়। বিবাদীরা আবারও আপিল করতে বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন আছে, যার লিভ টু আপিল কেস নং ২৮৪৭/২৪।

আরও জানা গেছে, আরএস এবং এসএ খতিয়ানে পাবনা জেলা পরিষদের নামে থাকলেও মামলায় তারা কোনো নোটিশপ্রাপ্ত হয়নি। ফলে মামলা ও রায়ের বিষয়টি জেলা পরিষদ জানতেই পারেনি। সম্প্রতি ওই জমি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে জেলা পরিষদের নজরে আসলে তারা সুপ্রিম কোর্টে আপিলের উদ্যোগ নিয়েছে।

এবিষয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা সুলতানা বলেন, ‘জমিটি নিয়ে অনেক আগে মামলা হলেও আমরা (জেলা পরিষদ) মামলার বিষয়টি এতোদিন জানতেই পারিনি। কোনো সময় নোটিশও পাইনি। এখন যেহেতু বিষয়টি জানতে পেরেছি। এখন বিষয়টি নিয়ে (আইনি) ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’

এবিষয়ে বাদী আবুল হোসেন মারা যাওয়ায় তার বড় ছেলে আফজাল হোসেনের যোগাযোগ করেও মন্তব্য পাওয়ায় যায়নি। তবে আরেক ছেলে আরজুল প্রামাণিক বলেন, ‘আমার বাবার জমি সরকারের নামে রেকর্ড হয়েছিল। পরে আমার বাবা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। সেই মামলা আমরা রায় পেয়েছি। পরে হাইকোর্টে মামলা হলে সেখানেও আমরা জিতেছি। এখন আরেকটি মামলা হাইকোর্টে আছে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে