ইয়াং ডিপ্লোম্যাট অফ দ্য ইয়ার-এ ভূষিত বামনার সোনিয়া মুন্নি

ছবি: যায়যায়দিন

লন্ডনে বাংলাদেশে হাইকমিশনের ফাস্ট সেক্রেটারী সোনিয়া মুন্নি ‘ইয়াং ডিপ্লোম্যাট অব দ্য ইয়ার ২০২৫’ পুরস্কারে ভুষিত হয়েছেন। লন্ডনে কূটনৈতিক অঙ্গনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডিপ্লোম্যাট ম্যাগাজিন তাকে এই পুরস্কার দেয়। সোনিয়া মুন্নি বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার ১ নং বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের মো: শাহজাহান মিয়া ও রত্নগর্ভা মোসা: বিলকিস বেগমের ৬ কন্যার মধ্যে পঞ্চম। তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিদেশ-বিষয়ক) ক্যাডারের ৩৪ ব্যাচের কূটনীতিক।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় লন্ডনের হিলটন হোটেলে মঙ্গলবার সন্ধায় এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে তাকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এতে বলা হয়, ‘ডিপ্লোম্যাট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ডস’- এর ১৫তম আসরে বিশ্বের ১০০ টিরও বেশী দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও কূটনীতিকরা এতে অংশগ্রহণ করেন। 

বিশ্বজুড়ে কূটনৈকিত বিষয়গুলোর ওপরভিত্তি করে লন্ডন থেকে প্রকাশিত ম্যাগাজিন ডিপ্লোম্যাট প্রতিবছর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। লন্ডনে নিযুক্ত কূটনীতিকদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হয় এ সাময়িকীর তরফ থেকে। বিবিসির কূটনৈতিক সাংবাদিক জেমস ল্যান্ডেল তাকে এ পুরস্কার তলে দেন।
ডিপ্লোম্যাট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড এমন এক সম্মাননা, যা যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত কূটনীতিকদেও স্বতঃস্ফূর্ত মনোনয়ন ও ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়। ১৮০ টিরর বেশী দেশের মিশনের প্রতিনিধিরা লন্ডনে প্রতিবছর এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেন।

পুরস্কার গ্রহণের সময় সোনয়া মুন্নি বলেন, “আমি বিশেষভাবে গর্বিত যে, আমি আমার প্রিয় দেশ বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছি এই লন্ডন শহরে - একটি নগরী যা  বৈশ্বিক কূটনীতির কেন্দ্রবিন্দু।”
সোনিয়া মুন্নির শৈশব কাটে বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার ১নং বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামে। গ্রামের চালিতাবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হয় তার জীবনের প্রথম পাঠ। পঞ্চম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়ে ভর্তি হন বাবার প্রতিষ্ঠিত জেসিএল নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়। সেখান থেকে ৮ম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে ভর্তি হন বুকাবুনিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। সেই বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ছিলেন সোনিয়া মুন্নির গর্বিত পিতা মোঃ শাহজাহান মিয়া। বরিশালের অমৃতলাল দে কলেজ থেকে এইচ এস সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক  ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে পরবর্তিতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয়বারের মতো মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-তত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ আরমান হোসেন অভিক এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিদেশ-বিষয়ক) ক্যাডারের ৩৪তম ব্যাচের সোনিয়া মুন্নি লন্ডনে নিযুক্ত হওয়া তার প্রথম কূটনৈকিত পোস্টিং, যেখানে তিনি কমনওয়েলথ সংক্রান্ত দায়িত্বে রয়েছেন।
‘ইয়াং ডিপ্লোম্যাট অব দ্য ইয়ার পুরস্কার কূটনৈকিত অঙ্গনে নুতন নেতৃত্বেও উত্থানকে স্বীকৃতি দেয় এং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের নেতৃত্ব বিকাশে এই ধরনের স্বীকৃতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
সোনিয়া মুন্নির আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ পুরস্কারের সাফল্যে পুরো দেশবাসীর সাথে তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক,        বন্ধু-বান্ধবসহ সকলে আনন্দিত।