পাবনা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ২০:৪৬

পাবনা প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

দালালের দৌরাত্ম, গ্রাহক হয়রানি, সরাসরি গেলে ভোগান্তি, দালালের বিশেষ সিলে শান্তি ও অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগে পাবনা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়। এসময় বিশেষ সিলের সংকেতের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে পাসপোর্ট করে দেওয়ার তথ্য প্রমাণ পেয়েছে দুদক। বিকাশে টাকা লেনদেনসহ বেশ কিছু অসঙ্গতিপূর্ণ কাগজপত্র পেয়েছে দুদুক।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে দুপুর ২ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযান চলমান রয়েছে। 


বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাসপোর্ট  অফিসের নানা অসঙগতি নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশের পর টনক পড়ে। পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট সেবা প্রদানে গ্রাহক হয়রানি ও ঘুষ দাবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সুত্রধরের নেতৃত্বে একটি টিম এই অভিযান পরিচালনা করছেন।

 
এসময় ঈশ্বরদী থেকে আসছেন, কৌশিক বিশ্বাস।  তিনি বলেন, গতকাল সকালে এসে সারাদিন বসে থেকেও কোন সেবা পাইনি, দালাল ধরিনি তাই কোন কাজ পাইনি। নতুন করে ফরম আবেদনের কথা বলছে। দুদক আসার পর আমার আগের ওই ফরমই জমা নিছে। এতো অনিয়ম আর দুর্নীতি কোন অফিসে হয় বলে জানা নেই।

 পাবনা সদরের হাজিরহাট এলাকা থেকে আসছেন গাফ্ফার হোসেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ১৪ দিন আগে আবেদন করলেও এখনো ছবি উঠানো হয়নি। সপ্তাহে তিন চারদিন ধরে পাসপোর্ট অফিসে ঘুড়েও কোন সেবা পাইনি। যেটা করতে সর্বোচ্চ তিনদিন লাগে।আমি টাকা  দেইনি এজন্য কাজ হয়নি। দালালের সঙ্গে আসলে দ্রুত কাজ হয়। ঢাকা থেকে দালাল আমাকে ফোন দিয়ে বলে যে ৮০০ হাজার টাকা দাও আইডি কার্ড কিছু লাগবে না। পাসপোর্ট অফিসের ১০২ নম্বর রুমে যাও সব ঠিক হয়ে যাবে।

পাবনা পাসপোর্ট অফিসে সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সুত্রধর জানান, পাবনা পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য ও গ্রাহক হয়রানি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেই সংবাদের সূত্র ধরে আজকে পাবনা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

এ সময় এনফোর্সমেন্ট টিম দালালদের দৌরাত্ম্য, বিকাশে অর্থ লেনদেনের চিত্র পেয়েছি, অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও দাললদের সঙ্গে বিশেষ সিলের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করা তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। দালালদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের যোগসাজশও পাওয়া গেছে। কর্মকর্তাদের সঙ্গেও দালালদের বিশেষ সখ্যতা রয়েছে। বাহিরের কম্পিউটারের দোকান থেকে ও দালালদের মাধ্যমে যেসব কাগজপত্র আসে সেগুলো দ্রুত করে দেওয়া হয়। এই অফিসে এতই অনিয়ম ও দুর্নীতি হয় যে একজন র্যাব কর্মকর্তাও পাসপোর্ট করাতে এসে হয়রানি করা হয়েছে। তিনি পাসপোর্ট করাতে পারেননি। সব অভিযোগের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযান এখনো চলমান রয়েছে। শেষ করে বিস্তারিত বলতে পারব।
 

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পাবনা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আহসান উদ্দিন বলেন, এখানে কোন দালাল চক্র নেই। সব নিয়মিত পরিচালনা হয়ে থাকে। দুদক অভিযান করছেন। দুদকের অভিযোগের বিষয়টি দেখা হবে।