বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

ডুমুরিয়ায় বোরো আবাদ কম হলেও, ভাঙবে উৎপাদনে রেকর্ড

ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি
  ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:১৭
ডুমুরিয়ায় বোরো আবাদ কম হলেও, ভাঙবে উৎপাদনে রেকর্ড
ছবি: যায়যায়দিন

খুলনার ডুমুরিয়ায় বোরো চাষে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও ধান উৎপাদনে রেকর্ড ভাঙ্গতে যাচ্ছে এবার। বন্যার কারণে ২৯৭ হেক্টর জমি অনাবাদি হয়ে পড়লেও বাম্পার ফলন হওয়ায় গত বছরের চেয়ে ৩৩৭ মেট্রিক টন ধান বেশি উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলন ও দাম বৃদ্ধি হওয়ায় খুশির ঝিলিক কৃষকের মনে।

কৃষি অফিস জানিয়েছে, উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়নে ৪২টি ব্লকে ব্যাপকভাবে ইরি-বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছে। এবছর ২১ হাজার ৫৫৮ হেক্টর জমিতে বোরোর চাষ হয়েছে। রোগ বালাইয়ের আক্রমণ কম থাকায় ফলন অনেক বৃদ্ধি হয়েছে। ২১ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও চাষকার্যের আগে আকষ্মিক বন্যার কারণে উপজেলায় ২৯৭ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদে অনুপোযোগি হয়ে পড়ে। জলাবদ্ধতায় পতিত জমির মধ্যে বেশি আছে রংপুর ও মাগুরাঘোনা ইউনিয়নে।

তবে এবার ফলন বৃদ্ধি হওয়ায় রেকর্ড ভাঙ্গতে যাচ্ছে পূর্বের। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর ১লাখ ৫৩ হাজার ৩৮ মেট্রিক টন ধান ঘরে তুলতে পারবে কৃষক।

হাইব্রীড ধানের মধ্যে এসএলবিএইচ, ব্র্যাক-৯৯৯, ব্র্যাক-১৭, এসিআই-৬, ইস্পাহানি-৬, শক্তি-২, সুবর্ণ-৪সহ ১০/১২ জাত এবং উপশীর মধ্যে ব্রি-ধান-২৮, ব্রিধান-৬৭, ব্রিধান-১০০, ব্রিধান-১০২সহ ৬/৭ জাতের ধান চাষে ভালো ফলন হয়েছে। এবছর উপশী জাতের ধান হেক্টর প্রতি ৬.১৫ মেঃটন এবং হাইব্রিড জাতের ধান ফলেছে ৭.৫ মেঃটন। যা গত বছর ছিলো উপশী ৬.৯ এবং হাইব্রিড ৭.৪।

গুটুদিয়ার কৃষক শ্মশান মন্ডল জানান, অতি বন্যার কারণে সময়মত বোরো চাষাবাদ করতে পারেনি কৃষকরা। অনেক দেরিতে চাষাবাদ করতে হয়েছে এবার। তবে রোগ বালাই কম থাকায় অন্যবারের চেয়ে ফলন অনেক ভালো হয়েছে। ধানের বাজার দাম ভালো হওয়ায় কৃষকরাও বেশ খুশি।

এদিকে ব্রিধান-১০৮ জাতের (উপশী) ধান এবার ডুমুরিয়ায় প্রদর্শনী হিসেবে ধামালিয়া ও খর্ণিয়া ইউনিয়নে ২ হেক্টর জমিতে নতুন চাষাবাদ হয়েছে। ফলন হাইব্রিড জাতের ধানের চেয়ে অনেক বেশি ফলেছে। হেক্টর প্রতি ৮.৫ মেঃটন উৎপাদন হয়েছে। অর্থাৎ বিঘায় সাড়ে ৪২ মন ধান ফলেছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, বোরো মৌসুম শুরুর কিছুদিন আগে আকষ্মিকভাবে বন্যার চাপ দেয়। এ অঞ্চলের প্রায় অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। পরবর্তিতে বিভিন্নভাবে পানি নিষ্কাশনের একপর্যায়ে বোরো চাষের উপযোগি করা হয়। কিন্ত ২৯৭ হেক্টর জমিতে এবছর বোরো চাষ করতে পারেনি কৃষক। যে কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে বাম্পার ফলন হওয়ায় বোরো আবাদ কম হলেও রেকর্ড ভাঙবে পূর্বের।

এ পর্যন্ত প্রায় ৫০% ধান কর্তন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আশাকরি সব ধান কর্তন শেষ হবে। ফলন এবং দাম দুটোই ভালো হওয়ায় কৃষকরা এবার বেশ খুশি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে