নেছারাবাদে ডিজিটাল ভূমি সেবা কর উদ্বোধন
প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:৫৫

‘ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করুন, ভূমির জটিলতা এড়িয়ে চলুন।’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলায় ভূমি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন ও জনসেবাকে আরও সহজতর করার লক্ষ্যে আজ দুপুর ১২টার সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হান মাহমুদ এর উদ্যোগে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। স্বরুপকাঠী ইউনিয়নের নয়ারহাট এলাকায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে একটি ভ্রাম্যমাণ ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ক্যাম্প। এই ক্যাম্পের উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়া এবং ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও স্বচ্ছ করা।
বর্তমানে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের জন্য অনেক সময় উপজেলা ভূমি অফিসে যেতে হয়, যা অনেকের জন্য সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য। বিশেষ করে বয়স্ক নাগরিক, নারী এবং প্রান্তিক কৃষকদের জন্য এটি এক বড় চ্যালেঞ্জ। এই সমস্যা সমাধানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিজ উদ্যোগে এই ক্যাম্পের আয়োজন করেন। এতে করে স্বল্প সময়ে, কম খরচে এবং কম ভোগান্তিতে মানুষ তাঁদের ভূমি সংক্রান্ত কর পরিশোধের সুযোগ পেয়েছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম , সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হান মাহমুদ, তহশিলদার বরুণসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তারা করদাতাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেন যেমন- দাগ নম্বর যাচাই, কর নির্ধারণ, বকেয়া হিসাব, এবং তাৎক্ষণিক রশিদ প্রদান। এছাড়াও অনেক মানুষকে অনলাইনে ভূমি কর পরিশোধের পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়, যাতে ভবিষ্যতে তারা নিজে থেকেই এই সেবা নিতে পারেন। এ উদ্যোগ সরকারের ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং জনগণকে প্রযুক্তির মাধ্যমে সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
এই ক্যাম্পকে ঘিরে স্থানীয় জনগণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ পরিলক্ষিত হয়। অনেকেই প্রথমবারের মতো তাদের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেন এবং সরাসরি সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে সেবা পাওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। অনেকে এমন উদ্যোগের ধারাবাহিকতা কামনা করেন এবং প্রত্যন্ত এলাকায় আরও ক্যাম্পের দাবি জানান।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হান মাহমুদ বলেন, “ভূমি কর আদায় শুধুমাত্র রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য নয়, বরং জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি এবং সরকারি সেবার প্রতি আস্থা গড়ে তোলার একটি মাধ্যম। আমরা চাই, প্রতিটি করদাতা যেন সম্মানজনকভাবে ও সহজে তার কর পরিশোধ করতে পারে।”
এই ধরনের ক্যাম্প কার্যক্রম শুধু সরকারি আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক নয় বরং এটি এক ধরনের সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড যা মানুষকে সরকারি সেবার আওতায় নিয়ে আসে। ভবিষ্যতে উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নেও এই ধরনের ভূমি কর আদায় ক্যাম্প আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে সর্বস্তরের মানুষ এই সুবিধা উপভোগ করতে পারে।
নয়ারহাটের এই ক্যাম্প সফলভাবে প্রমাণ করেছে যে, সঠিক পরিকল্পনা ও আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলে সরকারি সেবা সহজে জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব। এটি জনসেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে ভবিষ্যতের পথনির্দেশক হয়ে থাকবে।
যাযাদি/ এসএম