মাগুরার শ্রীপুরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার আব্বাস উদ্দিন ও বিএনপির অপর সাবেক সাধারণ সাধারণ সম্পাদক মুন্সী রেজাউল করিম এ দু-গ্রুপের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এ সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অন্ততঃ ২৫-৩০ জন মারাত্বক আহত হয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোাতায়েন রয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, বিএনপির পদ-পদবী ও নেতৃত্ব নিয়ে বিএনপির একটি পক্ষ বিএনপি নেতা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বদরুল আলম হিরো ও বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ম্ন্সুী রেজাউল করিম এবং অপর পক্ষ বিএনপির অপর সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার আব্বাস উদ্দিনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দলীয় দ্ব›দ্ব চলে আসছিল।
এ দ্বন্দ্বের জের ধরে এক সপ্তাহ পূর্বে আব্বাস-খলিল মোল্লা গ্রæপের সমর্থক পলাশ মল্লিক নামে এক আওয়ামীলীগ কর্মীকে শ্রীপুর বাজারে মারধর করে রেজাউল গ্রæপের লোকজন। এরপর থেকে আব্বাস খোন্দকার গ্রæপের খলিল মোল্যা ও বাবলু মিয়ার লোকজন দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে শ্রীপুর বাজারে মহড়া দিতে থাকে এবং মুন্সী রেজাউল করিমের বাড়ি-ঘর ভাংচুরের পরিকল্পনা করতে থাকে।
একপর্যায়ে রেজাউল করিম সামাজিক দলে সংঘবদ্ধ হয়ে তার লোকবল নিয়ে রবিবার বিকেলে খলিল ও সেলিম মোল্লার লোকজনকে শ্রীপুর বাজারে ধাওয়া করে বাজারের নেতৃত্ব নিয়ে নেন। এরই রেশধরে মঙ্গলবার(২২ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৫'টার দিকে আব্বাস খোন্দকার গ্রæপের সেলিল মোল্লা ও খলিল মোল্লা নেতৃত্বে হরিন্দী গ্রাম থেকে, বাবলু মিয়ার নেতৃত্বে মদনপুর গ্রাম থেকে ও আব্বাস-নালিম খোন্দকারের নেতৃত্বে সারঙ্গদিয়া,মুজদিয়া গ্রাম থেকে শতাধীক লোক দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে শ্রীপুর গ্রামে এসে রেজাউল মুন্সীর লোকজনের উপর হামলা চালায়। পরে রেজাউল মুন্সীর নেতৃত্বে শ্রীপুর, চন্দ্রপাড়া, হোগলডাঙ্গা, গোয়ালপাড়া ও খড়িবাড়িয়া গ্রাম থেকে তার লোকজন ছুটে এসে আব্বাস খোন্দকারের লোকজনের প্রতিহত করার চেষ্টা করে।
এসময় উভয় গ্রæপের মধ্যে দু’ঘন্টার অধীক সময় ধরে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও মুখোমুখি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের জাহিদুল ইসলাম(৪২), সেলিম মোল্লা(৪০), রশিদ মোল্লা(৪৫), দুলাল বিশ্বাস(৪৫), সামছুল মোল্লা(৪০), আলেক বিশ্বাস(৫৭) ওয়াসিম মোল্লা(৩৮), মামুন মিয়া(৪০), আকাশ(৩৮), মিরাজ(৪২), লাউন মোল্লা(৩৮), আবু মুসা(১৪), বাবু মোল্লা(৪৫), মওলা(৫৫), মনিরুল শেখ(৪৫), শফিক(৩৫), মারুফ(৪৫), জাহাঙ্গীর(৪০)সহ অন্ততঃ ২৫-৩০ জন মারাত্বক আহত হয়। আহতরা বর্তমানে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা থাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইদ্রিস আলী জানান, সংবাদ পেয়ে সকাল থেকেই শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং পুলিশের হস্তক্ষেপেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে এলাকায় এখনও উত্তেজনা রয়েছে। সংঘাত এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
যাযাদি/ এম