রোববার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিজয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুত সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ

মো: শফিউল্লাহ, আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি
  ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:২০
ছবি: যায়যায়দিন

আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর ৫৪তম মহান বিজয় দিবস। দিবসটি উদযাপনে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। এদিন বীর শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে পুরো বাঙালী জাতি। এদিন জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, বিদেশী কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ। এরই মধ্যে নেয়া হয়ে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহ সকল প্রস্তুতি প্রকার প্রস্তুতি।

দিবসটি উপলক্ষে স্মৃতিসৌধ চত্বরে ধোয়া-মোছাসহ সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। স্মৃতিসৌধের ফটক ও দেয়ালে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন নির্বিঘ্ন করতে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও।

সরেজমিনে স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধ চত্বরের বিভিন্ন সড়ক পানি দিয়ে ধুয়ে-মুছে পরিস্কার করা হয়েছে।রোপন করা হয়েছে বিভিন্ন স্থানে নতুন ফুলের চারা। সড়কবাতিগুলোর লোহার পাইপে নতুন করে রংয়ের আঁচর পরেছে। শেষ হয়েছে রং-তুলির কাজ। শতাধীক শ্রমিক-কর্মচারি দেড় মাসেরও অধিক সময়ে অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিবিড় যত্নে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে রঙিন করেছেন।

এদিকে, এখবো জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে স্মৃতিসৌধ দেখতে ভীর করেছেন অনেকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে জনসাধারণের প্রবেশ ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকার বিষয়টি জানার পর ফটকের খানিকটা দূড়ে দাঁড়িয়ে স্মৃতিসৌধ দেখছেন তাঁরা।

এছাড়া, স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে নতুন সড়কবাতি লাগানো, সড়ক বিভাজকে নতুন করে রং দেয়া ও সড়কে জমে থাকা ধুলোবালি পরিস্কার করতে দেখা গেছে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ ও সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা মন্ডলী ও বিদেশী কূটনীতিকসহ লক্ষ লক্ষ জনতা জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের সম্মানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সেই লক্ষে গণপূর্ত অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্সকে ধুয়ে-মুছে পরিপাটি করা, ফুল দিয়ে সাজানো, রঙ তুলির কাজ, সিসি ক্যামেরা স্থাপন সহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে। দীর্ঘ প্রায় দেড় মাস ধরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ সৌন্দর্য্য বর্ধণের কাজ করা হয়। আমরা গণপূর্ত অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পুরো স্মৃতিসৌধ চত্বর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নকরাসহ নানাভাবে সাজিয়েছি। শ্রদ্ধা জানাতে পুরোপুরি প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ।

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন বলেন, সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি সকলে যেন শ্রদ্ধা জানাতে পারেন সে লক্ষে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পোশাকে, সাহা পোশাকে এবং এপিবিএন সহ সব স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আশপাশের যে সকল জেলা রয়েছে এগুলোও আমাদের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে চলে আসবে। সারাদেশের মানুষ আনন্দঘন পরিবেশে বিজয় দিবস উদযাপন করবেন তাই এখন পর্যন্ত কোন ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শঙ্কা নেই।

তিনি আরো জানান, এই মুহূর্তে স্মৃতিসৌধে বহিরাগতদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হবে পুরা স্মৃতিসৌধ এলাকা। যেকোনো অপরিচিত ব্যক্তিকে দেখলেই তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে।

১৯৭২ সালে সাভারের নবীনগরে ১০৮ একর সবুজে ঘেরা ভূমির উপর স্বাধীনতার স্মারক জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে