বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে মারা যান মা আছিয়া বেগম (৮০)। মায়ের মৃত্যুতে সবাইকে সান্ত্বনা দিতে পারলেও নিজে শোক সইতে না পেরে অবশেষে ৫ ঘণ্টা পর মারা গেলেন ছেলে শফিকুল ইসলাম শফি (৬০)।
এমনই হৃদয় বিদারক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের বড় গুয়াখড়া গ্রামে। রোববার (০১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মারা যান মা। আর রাত একটার দিকে মারা যান ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা রিপন রহমান জানান, বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন বড় গুয়াখড়া গ্রামের মৃত ফরমান আলীর স্ত্রী আছিয়া বেগম। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ৪ মেয়ে সহ নাতি-নাতনি রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে আছিয়া বেগমের ছেলে শফিকুল ইসলাম শফি সবাইকে সান্ত্বনা দেন ও ধৈর্য ধারণ করার কথা বলেন। মায়ের জন্য দোয়া করতে বলেন। পরদিন সোমবার (০২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় তার মায়ের জানাজা নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়।
এর মাঝে একইদিন রোববার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করেই বুকে ব্যথা উঠলে অসুস্থ হয়ে পড়েন ছেলে শফিকুল ইসলাম শফি। স্বজনরা তাকে দ্রুত চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত একটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন।
শফিকুল ইসলাম শফির ছেলে ওমর ফারুক জানান, 'আমার দাদীর মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মধ্যরাতে স্ট্রোক করেন আব্বা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার জানান মারা গেছে। দাদি মারা যাবার ৫ ঘণ্টা পর আমার আব্বা মারা গেছে।'
সোমবার (০২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বড় গুয়াখড়া সম্মিলিত ইদগাহ মাঠে মৃত মা ও ছেলের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে একই কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। মা-ছেলের এমন মৃত্যুতে স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে, স্বামীর মৃত্যুর পর সোমবার বিকেল চারটার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন শফিকুল ইসলামের স্ত্রী ফিরোজা খাতুন। তাকে প্রথমে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেছেন চিকিৎসক।
যাযাদি/ এস