ড্যাফোডিল ফ্যামিলির চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেছেন, রাজনীতির জন্য যে রাজনীতি করত হয়ে সেটি আমি করতে পারছি না। যে কারণে আমি রাজনীতিতে আসছি না। তবে রাজনীতি যারা করেন তাদেরকে আমি শ্রদ্ধা করি। আর এই রাজনীতিতে ভালো লোকদের আসা প্রয়োজন আছে। আমি মনি করে আমাদের চাঁদপুরেও একজন ভালো রাজনীতিক আসবে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চাঁদপুরের সাংবাদিকদের কমিউনিটি অনেক শক্তিশালী। দৈনিক চাঁদপুর কন্ঠ দিয়ে দৈনিক পত্রিকা শুরু হলেও এখন অনেকগুলো দৈনিক পত্রিকা আছে। তার মানে আপনারা টিকে আছেন। এই যে আপনারা টিকে আছেন, এটিও আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। সব জায়গাই সমস্যা আছে। কিন্তু আপনারা কিভাবে চাঁদপুরকে সারা বিশে^র কাছে মডেল হিসেবে তুলে ধরা যায়, এর জন্য অনেকগুলো সুযোগ আপনাদের কাছে আছে। যে জায়গাটাতে আমরা কিভাবে কাজ করতে পারি, আর আপনারা যদি এই ইস্যুতে কাজ করেন তাহলে অনেক প্রতিভা ও ভালো লোক বেরিয়ে আসবে।
সবুর খান বলেন, আমি নিজে ছোট বেলা থেকে অনেক লড়াই এবং প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে এসেছি। কিন্তু আমার কেন যেন মনে হয় আপনারা যদি চাঁদপুরে পজেটিভ সাংবাদিকতা নিয়ে আসেন এবং আপানাদের মাধ্যমে সেটি সম্ভব। কারণ এখন যে টেকনোলজির যুগ এসেছে অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার হচ্ছে। আমি প্রায় সময় শুনি চাঁদপুরে নাকি ভালো লোকের অভাব। এটি আমি বিশ^াস করি না। ভালো লোক আছে, কিন্তু আমরা তাদেরকে খুঁজে বের করে আনতে পারি না। আমি বলবো এই জায়গায় আপনাদের দ্বৈন্যতা আছে। এতে আপনারা আমাকে ভুল বুঝতে পারেন।
তিনি বলেন, আমিও আবারও বলছি চাঁদপুরে অনেক ভালো লোক আছে। কেউ একজন বক্তব্যে বলেছেন আমি রাজনীতিক ছিলাম। কিন্তু আমি রাজনীতি করতে চাই না। কেন করতে চাই না। অর্থাৎ রাজনীতিতে রাজনীতি নাই। এটি আপনারাও ভালো করে জানেন। রাজনীতিতে কি আছে সেটা আমি জানি। রাজনীতি ছাড়া দেশ ও রাষ্ট্র চলবে না। কিন্তু রাজনীতিতে ভালো লোক আসতেই হবে। আমরা সংস্কার করছি, রাজনীতিতে কী সংস্কার আছে।
তিনি বলেন, চাঁদপুরের ভালো লোকগুলোকে আমরা সবাই মিলে সামনে নিয়ে আসতে হবে। আর যেসব শিক্ষার্থী আছে তাদের কাজগুলো তুলে ধরতে হবে। আপনার পজিটিভি সাংবাদিকতার জন্য একটি কমিউনিটি গড়ে তুলেন। সেখানে প্রয়োজনে আমি ১০লাখ টাকা দিব। আমি না দিলেও অনেক ভালো লোক আছে যারা এই ধরণের ভালো কাজে এগিয়ে আসবে।
সবুর খান বলেন, আমি সফল বলেই আমার ভয় বেশি। আজকে আমি একটি বিদ্যালয়ে আমন্ত্রিত হয়েছি। আমি জানতামনা সেখানে কি হচ্ছে। আমি আগেই জিজ্ঞাসা করেছি সেখানে হিন্দি কিংবা ইংরেজী গান হচ্ছে নাতো। আমে দেখেছি কয়েকটা স্কুলে হিন্দি এবং ইংরেজী গানের প্রচলন আছে। এ কারণে আমাকে বুঝতে আমি কোথায় যাচ্ছি। আমি যদি অসামাজিক কোথাও যাই, সেখানে আপনারাই বলবেন উনি কোথায় যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে আমাদের সন্তানদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব নেই। এখন শুধুমাত্র সার্টিফিটের জন্য পড়ছে। কিন্তু তারা কি শিখছে এবং কি কাজ জানে সেটা দেখা হচ্ছে না। আমাদের কাছে কাজের জন্য আসলে বলে আমি এই পাশ ওই পাশ করেছি। কিন্তু সে বলে না আমি এই কাজে দক্ষ। দক্ষতা ছাড়াত কাজ পাওয়া যাবে না।
প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্তের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল বিন বাশার, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মুনির চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন লিটন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল-ইমরান শোভন ও আব্দুল আউয়াল রুবেল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি ড. মো. সবুর খানকে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
মতবিনিময় সভায় প্রেসক্লাবের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সাংবাদিকদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন এবং আগামী দিনের পথ চলায় প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য হিসেবে সবুর খানকে পাশের থাকার আহবান জানান।
এর আগে তিনি প্রেসক্লাবের সামনের উদ্যোনে গাছের চারা রোপন ও ফিতা কেটে পাঠাগার উদ্বোধন করেন।
মতবিনিময় সভায় চাঁদপুরের বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক, প্রেসক্লাবের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
যাযাদি/এআর