বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী বেবী নাজনীন বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সময় শুধু বিএনপি নয়, স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে যারাই কথা বলেছে তারাই নির্যাতিত হয়েছে। সারাদেশ পরিণত হয়েছিল আওয়ামী অত্যাচারের রাজত্ব।
আমাদের প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবৈধভাবে জেলে বন্দি করে রেখেছিল। তারপরেও তিনি আপোষ করেননি। তিনি বলেন, ছাত্র জনতার গণআন্দোলনে নিহত শহীদ আবু সাইদ, মুগ্ধ সাজ্জাদসহ শতশত বীরদের কারণে আজ আমরা মুক্ত। আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি জানিয়ে তিনি সকল শহীদের রুহের মাগফিরাত ও আহতের সুস্থতা কামনা করে বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর আমাদের দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তাদের সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আমাদের নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আগামির বাংলাদেশ হবে সুন্দর এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। শনিবার বিকেলে নীলফামারীর সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি আয়োজিত বহুদলীয় গণতন্ত্রের রুপকার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা, রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনায় এবং সাম্প্রতিক ছাত্র জনতার আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতায় কোরআন খানি ও দোয়া মাহফিলে অংশ গ্রহনে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো রাখেন।
ঢাকা থেকে ইসএস বাংলার একটি ফ্লাইটে বেলা ১১ টায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে আসেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী বেবী নাজনীন বলেন, তারেক রহমান কর্তৃক জাতির সামনে উপস্থাপিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ হবে স্বনির্ভর। এজন্য আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আমি বিএনপির রাজনীতি করি বলে আওয়ামীলীগের রোষানলে পড়েছি। দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য হয়েছি। বেবী নাজনীন বলেন, নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে এখন পর্যন্ত ভাবছি না। দলীয় সিদ্ধান্ত হলেই সব পরিস্কার হবে। এখন আমাদের একটাই কাজ, আর তা হলো তারেক রহমানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় দলকে সু সংগঠিত করা। তিনি বলেন, সৈয়দপুর হচ্ছে আমার জন্মস্থান। আওয়ামী লীগের রোষানলে থাকায় আমি দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকায় আসতে পারিনি। এখন এসেছি, তাই আমার এলাকাসহ কিশোরগঞ্জের মানুষের পাশে থাকতে চাই। পরে বেবী নাজনীন ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত শহীদ সাজ্জাদ হোসেনের বাড়িতে যান। সেখানে সাজ্জাদের পিতা মাওলানা আলমগীরসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, শহীদ সাজ্জাদরা আমাদের অহংকার। স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগের হাত থেকে দেশবাসীকে রক্ষায় তাদের আত্মত্যাগ ইতিহাসের, খাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের সম্মান জানিয়ে তাদের দেখিয়ে দেওয়া পথে আগামির সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে হবে। এজন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন তিনি।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি এ্যাড. ওবায়দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সামশুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ পারভেজ লিটন, অর্থ সম্পাদক আবিদ হোসেন লাড্ডান, জেলা যুবদলের আহবায়ক তারিক আজিজ, সদস্য সচিব পারভেজ আলম গুড্ডু, পৌর যুবদল নেতা সালাম রেজা, দেলোয়ার হোসেন, মহিলা দল নেত্রী ও সাবেক কাউন্সিলর সাবিয়া বেগম, বিএনপি নেতা লক্ষণপুর স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল করিম রেজা, বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেনসহ বিএনপি ছাড়াও দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী প্রমুখ।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা বেবী নাজনীন দুপুরে তাঁর দাদা দাদিসহ আত্মীয় স্বজনের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়ায় অংশ নেন। পরে জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক শাহীন আকতার শাহীনের পুরাতন বাবুপাড়াস্থ বাসভবনে যান। সেখানে তিনি অসুস্থ্য্ শাহীন আকতার শাহীনের সাথে কথা বলেন এবং শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন।
বিকেলে শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কস্থ বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল গফুর সরকার।
অনুষ্ঠানে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষকদল, তাঁতীদল, শ্রমিকদল, শহীদ জিয়া পরিষদ, জিয়া মঞ্চ, জাসাসের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
যাযাদি/এসএস