ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় চাকরিচ্যূত সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে যশোরে মানববন্ধন করেছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা।
বুধবার বেলা ১২ টার দিকে প্রেস ক্লাব যশোরের সামনে মানববন্ধনে তারা এই দাবি জানান। বিডিআর কল্যাণ পরিষদ বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের আয়োজনে মানববন্ধনে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের পরিবারের সদস্যরাও অংশ নেন।
ছোট বোনকে সাথে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন তরুণী বৃষ্টি আক্তার। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কাশিমনগরের এই তরুণী কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তার বয়স যখন সাত; তখন তার বাবা বিডিআর সদস্য শরিফুল ইসলাম পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের মামলায় কারাগারে যান। এখনো একটি নাশকতা মামলায় কারাগারে রয়েছেন বলে দাবি বৃষ্টি আক্তারের।
তিরি বলেন, ‘তথাকথিত বিদ্রোহ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে বিগত সরকার আমার বাবাকে কারাগারে পাঠিয়েছে। দেড় দশকের বেশি সময় আমার বাবা কারাগারে। সংসারে আমরা মা ও দুই বোন। একদিকে বাবা জেলে; অন্যদিকে বাবার চাকরিও নেই। এমন পরিস্থিতিতে গৃহিনী মা আমাদের নিয়ে পড়েন অথৈ সাগরে। আমরা বছরের পর বছর চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছি। আমার পরিবারে সরকার তথাকথিত বিদ্রোহের ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়ার কারণে আমার দুই বোনেরও কোথাও চাকরি হয়নি। তিনি জানান, ৫ আগস্টের পর দেশ দ্বিতীয়বার মুক্ত হলেও বিডিআর সদস্যদের পরিবার সেই স্বাদ গ্রহণ করতে পারেনি। যেই দিন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের মুক্তি মিলবে, তাদের চাকরি পুনর্বহাল হবে সেদিনই দ্বিতীয় মুক্তির স্বাদ পাবো’।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রæয়ারি পিলখানায় ‘পরিকল্পিত হত্যাকান্ড’ সংগঠিত হয়েছে। এ জন্য সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করতে হবে। পিলখানা হত্যাকান্ড ছিল পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সুদূরপ্রসারী এক নীল নকশার অংশ। এর পেছনে মূল কারণ ছিল দেশের সেনাবাহিনী ও তৎকালীন বিডিআরের সামর্থ্যকে ধ্বংস করা। পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনাকে তথাকথিত বিদ্রোহ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে বিডিআর সদস্যদের চাকরিচ্যুতসহ বিভিন্ন মেয়াদে শান্তি দেওয়া হয়েছিল।
এতে কয়েক হাজার বিডিআর সদস্য ও তাঁদের পরিবার চরম দুর্দশায় পড়ে। তাঁরা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। যারা বিস্ফোরক মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন তাদের অনতিবিলম্বে মামলা থেকে অব্যাহতিপূর্বক মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান বক্তারা।
বিডিআর কল্যাণ পরিষদ যশোরের সমন্বয়ক ওহিদুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা সামির হোসেন, ঝিকরগাছা উপজেলা সমন্বয়ক সুবেদার আব্দুল সামাদ, অভয়নগর উপজেলা সমন্বয়ক হাবিলদার আব্দুল লতিফ, বাঘারপাড়া উপজেলা সমন্বয়ক জাহিদ হোসেন, চৌগাছা উপজেলা সমন্বয়ক রাজু আহমেদ, সদর উপজেলা সমন্বয়ক কামরুজ্জামান প্রমুখ।
যাযাদি/ এম