মধুমতি নদীর কচুরিপানার স্তুপ অপসারণ, নৌ চলাচল স্বাভাবিক

প্রকাশ | ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮

স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ
ছবি: যায়যায়দিন

মধুমতি নদীতে কৃষকের বের করে দেওয়া বিলের কচুরিপানা, ধানের গোড়া, দুরলী মধুমতির মানিকহার ব্রিজের পিলারে বেধে গিয়ে কচুরিপানার স্তুপে পরিণত হওয়া নদীর প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা পরিষ্কার করেছে গোপালগঞ্জ পাউবো। 

নদীর পানির চাপে কচুরিপানার স্তুপ এতটাই পুরো হয়েছিল যে, তার ওপর দিয়ে লোকজন পায়ে হেটেই নদী পার হতে পারতো। আর এ কারণে ২০ দিন ধরে গোপালগঞ্জের সাথে ৫ জেলার নৌ-চলাচল বন্ধ ছিল। এতে বাগেরহাট, পিরোজপুর, নড়াইল, বরিশাল ও খুলনার সাথে সরাসরি নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে কচুরিপানার স্তুপ পরিস্কার করে ২৫ নভেম্বর নৌ-চালাচল সচল করে দিয়েছে। 

গোপালগঞ্জে মধুমতি নদীর মানিকহার ব্রিজটি গুচ্ছ পিলারের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে পিলারের ফাঁকে ফাঁকে কচুরি ঢুকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। এ কচুরির স্তুপের ওপর দিয়ে এখানে ঘুরতে আসা উৎসুক জনতা চলাচল করেন। ২ বছর আগেও একবার এই অবস্থা হয়েছিল। সে সময়েও সরকারি উদ্যোগে এটি অপসারণ করা হয়।

বরিশালের সবজি চারা ব্যবসায়ী শাওন মোল্লার বলেন, বরিশাল ও পিরোজপুর থেকে নৌকায় লাউ, কুমড়া, সিম, বেগুন, ফুলকপি, বাধাকপিসহ সবজির চারা এনে গোপালগঞ্জে বিক্রি করি। এখন শীতের সবজির চারা বিক্রির পুরো মৌসুম চলছে। কিন্তু কচুরি পানার কারণে নৌকা গোপালগঞ্জ শহর ও আশপাশের গ্রামের হাট বাজারে নিতে পারছি না। এতে ব্যবসার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। আমি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই।

কার্গোচালক বশির মিয়া বলেন, এই নদী দিয়ে আমরা ধান, চালসহ বিভিন্ন পণ্য খুলনা ও বরিশালে পরিবহন করি। কিন্তু মানিকহার ব্রিজের নীচে কচুরিপানার স্তুপ জমেছে। ওই স্তুপের ওপর দিয়ে আমরা কার্গো চালাতে পারছি না। মানিকহার ঘাটে কার্গো নোঙ্গর করে বসে আছি। এতে আমাদের জীবন-জীবিকা অচল হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কচুরিপানা পরিস্কার করে দিয়েছে। এখন আমরা আগের  মতো আমাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবো। 

উরফি গ্রামের গাজী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এ নদী দিয়ে আমাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য, নির্মাণ সামগ্রী কম খরচে পরিবহন করতে পারি। কিন্তু নদীতে কচুরিপানার স্তুপ জমে আমাদের দৈনন্দিন কাজ কর্ম ব্যাহত হয়েছিল। এখন এখানে আর কোনো সমস্যা নেই।

গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রিফাত জামিল বলেন, মধুমতি নদীতে এ অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় ২০ দিন নৌচালাচল বন্ধ থাকে, এতে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়। বিষয়টি আমি লিখিত ও মৌখিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মানিকহার ব্রিজ এলাকার কচুরিপানার স্তুপ পরিষ্কার করে দিয়েছি। নদীতে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। দূর-দুরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীদের আর কোনো সমস্যা নেই।

যাযাদি/ এসএম