ইউরোপের দেশ রোমানিয়া থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিতে এনামুল হক সহ বন্ধুদের একটি দল দেশে আসেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুড়ান্ত পর্যায়ে যখন রূপ নেয় ঠিক তখন ৪ আগস্ট সিলেট শহরের বন্দরবাজার পয়েন্টে ৪০/৫০ জন সহকর্মীদের একটি গ্রুপের সাথে অবস্থান নেন প্রবাসী এনামুল হক। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কালে বার বার হাত জোড় করে পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন এটি পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন নয় আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি শেখ হাসিনার বিদায়ের জন্য।
কিন্তু ১৫/২০ মিনিট শান্ত থাকার পর পুলিশের কিছু অতি উৎসাহি সদস্য বৃষ্টিরমতো গুলি ও টিয়ার সেল ছুড়তে থাকে। এদিন যোহরের নামাজের পর গুলিবিদ্ধ হন আন্দোলনে অংশ নেয়া এনামুল হক।
হয় শাদাৎবরণ না হয় খুনি শেখ হাসিনার পদত্যাগ এক দফা দাবী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সিলেট নগরীর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের সামনে আন্দোলনকারীদের সাথে ৩ আগস্ট আন্দোলনে শরীক হন জাহিদ হোসেন। এদিন আন্দোলন চলাকালে কিছুটা আহত হন জাহিদ। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আবারও পরের দিন ৪ আগস্ট একই এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন। হঠাৎ করে পুলিশের ছুড়া গুলিতে মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।
এ সময় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে তার চেয়ে আরো বেশী গুরুতর আহত হয়। তাৎক্ষনিক সহকর্মী বড় ভাইরা তাদের দুজনকে উদ্ধার করে মোটরসাইকেল যোগে ইবনেসিনা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সোমবার দুপুরে ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুখানে আহত ও শহিদদের স্মরণে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে স্মরণ সভায় অনুভুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে এসব কথা বলেন সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর ইউপির খাশিপাড়া গ্রামের রোমানিয়া প্রবাসী আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী আহত এনামুল হক ও উপজেলার উছমানপুর ইউপির ইছামতি গ্রামের আহত জাহিদ হোসেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপমা দাসের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) শাহনাজ পারভীনের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, আহত পরিবারের সদস্য মুমিন সাহরিয়ার মাহি। স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিছবাহ, উপজেলা জামায়াতের আমীর সোহরাব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আনহার মিয়া, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম, আব্দুর রূপ আব্দুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কয়েছ আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান আহমদ, জমির আহমদ, উপজেলা জামায়াতের নায়বে আমীর রেজওয়ানুর রহমান চৌধুরী শাহিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাফির আহমদ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাগণ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলওয়াত করেন উপজেলা জামে মসজিদের ইমাম হাফিজ মো. আশিকুর রহমান ও গীতাপাঠ করেন সমাজসেবা কর্মকর্তা জয়তী দত্ত।
যাযাদি/ এম