ঘাম ঝরানো স্বপ্নের ফসল কাটতে ব্যস্ত কৃষকরা

প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:৩৭

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গ) প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

অগ্রহায়ণের ঝকঝকে আকাশ। মাঠজুড়ে কৃষকের সোনালি স্বপ্নের ছড়াছড়ি চনমনে গন্ধে মাতোয়ারা দামুড়হুদার কৃষকরা। মাঠে মাঠে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন দুলছে। বাতাসে হিমগন্ধে শীতের মাঠজুড়ে সোনারঙা ধানের ছড়াছড়ি। আমন ধানের চনমনে গন্ধে মাতোয়ারা কৃষক-কৃষাণীরা। দিগন্তজোড়া মাঠ সেজেছে যেন হলুদ-সবুজ রঙে। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক। 

আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় নির্বিঘেœ ধান কাটা মাড়াই ও শুকানোর কাজ করতে পারছেন কৃষক। এবার ধানের দাম বেশি পেয়ে খুব খুশি কৃষকরা। ঘাসের ডগায় শিশিরবিন্দুর আলতো পরশ আর মিষ্টি রোদের স্নিগ্ধতা জানান দিচ্ছে বছর ঘুরে আবার এসেছে অগ্রহায়ণ। 

এসেছে বাঙালির প্রধান কৃষিজ ফসল ধান কাটার ক্ষণ। কৃষকের আঙিনায় গড়াগড়ি খাচ্ছে নতুন ধান। গ্রামেগঞ্জে মাঠে মাঠে ম-ম গন্ধ। বাংলার ঘরে ঘরে মানুষ মেতে উঠছে এই নব-অন্নের ঘ্রাণে। স্মরণাতীতকাল থেকেই বাঙালির জীবনে নতুন ধান কাটা আর সেই ধানের প্রথম অন্ন গ্রহণকে কেন্দ্র করে আয়োজন হয় নবান্ন উৎসব। সুঘ্রাণ খেজুর রস সংযোগে নতুন চালে তৈরি হচ্ছে পায়েস ও পিঠা-পুলি। বউ-ঝিদের নাইওর করার ধুম পড়েছে গ্রামে গ্রামে।  

দামুড়হুদা উপজেলায় পুরোদমে ধান কাটার নবান্নের উৎসব। আর এ ফসল কাটার মহোৎসবে ব্যস্ততম সময় কাটাচ্ছেন এলাকার কৃষক-কৃষাণীরা। শীতের সকাল থেকে পড়ন্ত বিকেল পর্যন্ত মাঠে-মাঠে ফসল কাটার চিরাচারিত দৃশ্য এখন বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে দেখা যাচ্ছে। তবে শ্রমিক সঙ্কটে ধান কাটা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। চলতি আমন মৌসুমে দামুড়হুদায় উৎসাহ নিয়ে আমন ধান কাটার কাজ শুরু করেছেন কৃষকরা। 

দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা তাদের চাষাবাদকৃত ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে।  এ বার উৎসাহ নিয়ে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ আরো আনন্দোদেও সাথে কাজ করছে বাজারে ধানের দাম নিয়ে চরম খুশি কৃষক । বর্তমান বাজারে ধানের দাম পেয়ে কৃষকরা খুশি । এবারে বর্ষা মৌসুমে সঠিক সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকুলে ধানের ফলন ভালো হবে বলে তাদের মধ্যে আশার সঞ্চার দেখা দিয়েছে। এ বছর আমন ধান পাকার সময়ে কিছু ধানের জমিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ হলেও তারপরেও ধানের ফলন ভালো হচ্ছে । বিঘাপ্রতি ২০-২৩ মন ধান হবে বলে আশা করছে কৃষকরা বেশি। 

দামুড়হুদা উপজেলার কুড়–লগাছি গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দীন আলী বলেন,  ধান উৎপাদন খরচ একটু বেশি হলেও বাজারে ধানের দাম মণ প্রতি ১৩০০ থেকে ১৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে তাতে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকরা বেশ লাভবান  হচ্ছে । এ ছাড়া মাঠ থেকে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য শ্রমিকদের মুজুরি মূল্য তুলনামুলক অন্য বছরের তুলনায় কম । সব খরচ বাদ দিলেও কৃষকরা এ বছর ভাল লাভ  হবে । 

দামুড়হুদা উপজেলা  কৃষি কর্মকর্তা  শারমিন আক্তার  জানান, এবারে দামুড়হুদা উপজেলায় ৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আমন লাগানো হয়েছিল। এক্ষেত্রে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল বিঘা প্রতি গড়ে ১৮ মণ। ‘কৃষক কৃষি বিভাগের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি গ্রহণ করার পাশাপাশি অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষকদেও মাঝে প্রনোদনাসহ  সুষম সার ব্যবহারের কারণে এবার আমন ধানের আশাতীত ফলন হয়েছে। আশা করছি উতৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।


যাযাদি/ এম