দামুড়হুদায় নদী হারাচ্ছে নব্যতা নিধন হচ্ছে মাছের পোনা

প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৩৩

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গ) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার মাথাভাঙ্গা নদীতে অবৈধভাবে বাঁশের আড়া-আড়ি বাঁধ এবং জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি।


এতে যেমন দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে নব্যতা হারাচ্ছে চুয়াডাঙ্গা একমাত্র প্রাণ মাথাভাঙ্গা নদী। পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

দামুড়হুদায় অসংখ্য আড়া-আড়ি বাশের বানা দিয়ে বাঁধ আর সুতি এবং কারেন্ট জালে ছেয়ে গেছে মাথাভাঙ্গা নদী। সম্প্রতি এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি এসব নদীতে বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে। নদীতে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দেওয়ার ফলে পলি জমে মাথাভাঙ্গা নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
মাথাভাঙ্গা নদীর বুকে অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করে নদীর নব্যতা সৃষ্টির মহোৎসবে মেতে উঠেছে কিছু অসাধু মৎস্যজীবী। পাড়ের দুধার থেকে অসংখ্য বাঁশের তৈরি অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করে পানির গতিরোধ করে নদীর মাঝখানে সামান্য জায়গা ফাকা রেখে নদীর স্রোতকে করা হচ্ছে বাধাঁগ্রস্থ। ওই সমস্ত বাঁধের মাঝখানে চিকন সুঁতোর (কারেন্ট জাল) ফাঁদ পেতে ধরে নেয়া হচ্ছে ডিমওয়ালা মাছসহ ছোটবড় সব ধরনের প্রাকৃতিক মাছ। ফলে দেশিও প্রজাতির মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। দামুড়হুদার বাস্তপুর গ্রামের কবরস্থানের পাশেই বাশগাছের নীচে মাথাভাঙ্গা নদীর বুকে বিশাল এক বাঁধ নির্মাণ করেছেন গ্রামের আক্তার হোসেন, মমিনুল ইসলাম, ছানোয়ার, খলিলুর রহমান, জাফর আলী। এছাড়াও রঘুনাথপুর-সুবলপুর ব্রিজের দক্ষিণেসহ লক্ষণ হালদার ও তার সহপাঠীরা, আমডাঙ্গা গ্রামের নীচে ভরত হালদার শুকুর আলী ও তার সঙ্গীরা এবং একটু পাশের স্থানে নাইমুর সহ তার সহপাঠীরা, গলাইদড়ি সেতুর দক্ষিণ দিকের বাকে জয়দেব হালদার ও দর্শনা শ্মানঘাটের নিকট স সুকেশ হালদারসহ  মাথাভাঙ্গা নদীতে তৈরি করা হয়েছে ছোটবড় অসংখ্য বাঁধ।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা মাথাভাঙ্গা নদী বাাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অবসর প্রাপ্ত অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সী বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে মাথাভাঙ্গা নদী বাচাও নিয়ে কাজ করছি প্রতি নিয়ত জেলা প্রশাসকের সাথে নদী কি ভাবে রক্ষা করা যায় তাই নিয়ে নিয়ে কাজ করছি। যেহেতু মাথাভাঙ্গা নদী চুয়াডাঙ্গা অক্সিজেন তাই আমাদের সকলকে নদী বাচানোর জন্য এগিয়ে আসতে হবে।
 
এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা মৎস্য অফিসার ফারুক মহলদার বলেন, কিছুদিন আগে মাথাভাঙ্গা নদীতে অবৈধ বাঁধ নির্মাণকারীদের বাধ ভেঙ্গে ও জাল আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আবারো কিছু ব্যাক্তি নদীতে বাধ দেয়ার সংবাদ শুনেছি।  যারা এখনও পর্যন্ত বাঁধ অপসারণ করেননি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

দামুড়হুদার উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোছা : মমতাজ মহল বলেন, মাথাভাঙ্গ নদীতে অবৈধভাবে বাঁধ দেয়ার কারণে নদী যেমন নাব্য হারাচ্ছে তেমনি দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে। নদী রক্ষার্থে সবার সচেতন হওয়া দরকার। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট করা হবে।

 

যাযাদি/এসএস