ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী রুহিয়া আজাদ মেলা শুভ উদ্বোধন
প্রকাশ | ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৮
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ৬৫ তম রুহিয়া আজাদ মেলা শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকালে রুহিয়া থানা ও রামনার্থ হাট সংলগ্ন মেলা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
মেলা কমিটির সভাপতি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সর্দার মোস্তফা শাহীন, গেস্ট অফ অনার সাবেক মেয়র ঠাকুরগাঁও পৌরসভা ও সাধারণ সম্পাদক ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি মির্জা ফয়সল আমীন, বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম পিপিএম, রুহিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম নাজমুল কাদের , অবিভক্ত রুহিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোস্তফা কামাল, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনছারুল হক, রুহিয়া থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
এই মেলাটি ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া থানার অন্তর্গত রামনাথ হাট সংলগ্ন এলাকায় প্রতি বছর এক মাসের জন্য আয়োজন করা হয়ে থাকে। রুহিয়া আজাদ মেলাটি আজো উত্তর জনপদের কালের সাক্ষী হয়ে আছে। ব্রিটিশ আমলে ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ১৫৩ নং- লাট ঝারগাঁওয়ের জমিদার শ্রী তারিণী প্রসাদ রায়চৌধুরী তার জমিদার বাড়ীর দক্ষিণে বর্তমান বাংলাদেশ-ভারত উত্তর-পশ্চিম সীমান্তবর্তী নাগর নদীর কোল ঘেঁষে একটি রাস মন্দির স্থাপন করেন।
রাশ পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর পূজার সময় যে লোক সমাগম হতো কালক্রমে তা একটি মেলায় রুপান্তরিত হয় এবং স্থানীয়ভাবে আলোয়াখোয়া মেলা নামে পরিচিতি পায়।ঊনবিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে জমিদার তারিণী প্রসাদ রায়ের পুত্র শ্রী শ্যামা প্রসাদ রায়চৌধুরী যিনি বাচ্চা বাবু নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন, তারই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আলোয়াখোয়া মেলাটি বিস্তৃত পরিসরে আয়োজিত হতে থাকে এবং মেলার খ্যাতি দূর দূরান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
জনশ্রুতি আছে যে, এই মেলায় ভারত বর্ষের বিভিন্ন এলাকা যেমন, ভুটান, নেপাল, কাশ্মির, এমনকি সুদূর ইরান থেকেও লোকেরা বিভিন্ন প্রকার দ্রব্য সামগ্রী, হাতি, ঘোড়া, উট, দুম্বা, গরু, মহিষ ইত্যাদি কেনা-বেচার জন্য নিয়ে আসত। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ভেঙ্গে ভারত ও পাকিস্তান দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হলে নাগর নদীটি দুই দেশের আন্তর্জাতিক সীমারেখায় পরিণত হয়, ফলে আলোয়াখোয়া মেলাটি নাগর নদীর পূর্ব প্রান্তে তৎকলীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। কয়েক বছর এভাবে চলার পর সীমানা নিরাপত্তার অজুহাতে তাও বন্ধ হয়ে যায়।পরে ১৯৫৯ খ্রীস্টাব্দে নতুন উদ্যোগে রুহিয়া আজাদ মেলা নামে এটি চালু করা হয়। মেলায় চিত্ত বিনোদনের জন্য রয়েছে নাগরদোলা, সার্কাস, পুতুলনাচ, মোটরসাইকেল খেলা।
যাযাদি/এআর