মাদারীপুর জেলার রাজৈরে মাদকাসক্ত স্বামীকে খুশি করতে মারধরের অভিযোগ তুলে আপন তিন ভাইসহ মাকে সৎ বানিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আপন মেয়ে মিতু আক্তারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন তার গর্ভধারিণী বৃদ্ধা মা রিলি বেগম। ঘটনাটি ঘটেছে রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামে। এ ঘটনায় মিতু আক্তারের বিচার চেয়েছেন তার নিজ ছেলেসহ এলাকাবাসী ও স্বজনরা।

ভুক্তভোগী পরিবার মামলার সূত্রে জানা যায়, রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের বেল্লাল মাতুব্বরের মেয়ে মিতু আক্তারের সঙ্গে ২০১৫ সালে একই গ্রামের আবদুল রব মোল্লার ছেলে সোহেল মোল্লার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই নেশার টাকার জন্য মিতুকে মারধর করতো তার স্বামী। এজন্য মাদকাসক্ত স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবা মার কাছে থাকতেন মিতু। এরইমধ্যে তাদের সংসারে একজন পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। যার বয়স বর্তমানে ৯ বছর, নাম আকাশ মোল্লা। আকাশ জন্মের পর থেকেই তার বাবা সোহেল মোল্লাকে দেখেনি। হঠাৎ স্বামীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠলে মিতু তার ছেলেসহ চলে যায় স্বামীর বাড়ি। পরে ছেলে তার বাবার বাড়ি থাকতে না চাইলে ছেলেকে মারধর করেন মা মিতু ও বাবা সোহেল। পরে সেখান থেকে কোনমতে ছেলে তার নানি বাড়িতে পালিয়ে চলে আসে। পরবর্তীতে ছেলেকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আসে মিতু। এসময় যেতে না চাওয়ায় গত ১২ নভেম্বর স্বামীর কথামতো মিতু নিজের মাথা নিজেই ব্লেড দিয়ে কাটে এবং আপন ভাই মাকে সৎ বানিয়ে মাদারীপুর আদালতে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেন।

স্থানীয় গাউছ-উর রহমান, রুবেল, আলামিন জানান, এখানে কোন মারামারি হয়নি। মিতু তার ছেলেকে নিতে আইছে, ছেলে যেতে না চাওয়ায় মিতু তার মা ভাইদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমরা এর কঠোর বিচার চাই প্রশাসনের কাছে।

মিতুর মা রিলি বেগম বলেন, আমি তাকে দশ মাস দশ দিন পেটে ধরছি। সে কিভাবে আমাকে সৎ বানাইলো, মিথ্যা মামলা দিল। আমি এই মেয়ের বিচার চাই।

মিতুর ছেলে আকাশ মোল্লা বলেন, আমার বাবা একজন নেশাগ্রস্ত। আমি আমার বাবারে জন্মের পর থেকে দেখিনি। আমার মা হঠাৎ করে আমাদের বাড়িতে আমারে নিয়ে যায়। আমি সেখানে থাকতে না চাইলে আমার মা এবং বাবা মারধর করে। তারা আমার নানী, নানা ও মামাদের নামে মিথ্যা মামলা দিছে। আমি আমার মার এবং বাপের বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানার জন্য অভিযুক্ত মিতু আক্তারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। আদালতে মামলা হয়েছে কিনা সেটা আমাদের জানা নেই। আদালত থেকে এ বিষয় কোন নোটিশ আসেনি। নোটিশ আসলে বিষয়টা খতিয়ে দেখা হবে।

যাযাদি/এসএস