পরিবার বাঁচাতে গ্রামে ফেরী করে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেন হয়রত আলী
প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:২৭
হরেক রকম পন্য বিক্রি করে সংসার চালান মো. হয়রত আলী (৪৮)। কাটাখালী এলাকায় বাসা ভাড়া করে থেকে বিভিন্ন এলাকার কয়েকজন এভাবেই গ্রামগঞ্জে ঘুরে স্বল্প মূল্যে নানা প্রকারের পণ্য সামগ্রী বিক্রি করছেন।
তার ভ্রাম্যমাণ দোকানে পাওয়া যায় সিলভারের হাড়ি, পাতিল, প্লাস্টিকের বাটি, ডালা, লবণদানি, বদনা, টুল,বটি, বাচ্চাদের খেলনা ও কসমেটিক্সসহ প্রায় ৪০/৫০ প্রকারের জিনিস। এই হরেক রকমের যে কোনো পণ্য মাত্র ১০-১০০টাকা বিক্রি হওয়ায় এরই মধ্যে এলাকার গৃহিণীদের কাছে তারা ভালো সারা পাচ্ছেন। সব হরেক রকমের নানা প্রকারের পণ্যসামগ্রী নিয়ে ছুটে চলছে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে। আর ডাক দিয়ে বলছেন ‘রাখবেন হরেক মাল, রাখবেন হরেক মাল।
পণ্য কিনতে আসা এক মহিলা জানান, হাতের কাছে কম দামী জিনিস পেয়ে বেশ কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় হরেক রকম পণ্য ক্রয় করলাম। আমি সহ গ্রামের মহিলারা হাতা,চুলের ক্লিপ,হাঁড়ি, নেলপালিসসহ, ঘরের ব্যবহারিক ছোটখাটো জিনিস পত্র ক্রয় করি।
হয়রত আলী জানান, এ ব্যবসায় বেচাকেনা ভালোই হয়। তার অধিকাংশ ক্রেতাই গ্রামের মহিলা। যারা কেনাকাটার জন্য বাজারে যায় না। তারাই তার কাছ থেকে নানা জিনিসপত্র কিনে থাকেন। অন্যান্য ব্যবসার মতো তাকেও খরিদদারদের বাকি দিতে হয়।
তিনি খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ফেরি করতে যান। একই গ্রামে প্রতিদিন যাননা। অনন্ত ৫/৭ দিন পর পর এক গ্রামে যান। এতে বিক্রি ভালো হয়। দুপুরের খাবার সঙ্গে নিয়ে যান। বেলা হলেই কোথাও একটু বসে জিরিয়ে নিয়ে খাবার খাওয়া সেরে নেন। এ ব্যবসা থেকে তার প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়।
এই ব্যবসায় কোনো চাঁদা, হয়রানি ছাড়া ব্যবসা করতে পারছি। এই অঞ্চলের মানুষ একটু শান্তি প্রিয়। ৬ বছর যাবৎ ব্যবসা করছি, তেমন কেউ আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেনি।
তিনি আরো বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে প্রতি বছর খুলনা ও বাগেরহাটে আসি হরেক রকম পণ্য বিক্রি করতে। আমার মত বেশ কয়েক জন এ ব্যবসায় জড়িত। বছরের কয়েক মাস এ কাজে জড়িত থাকি অন্য সময় বাড়ি কৃষি কাজ করি।
জীবিকার প্রয়োজনে অন্য জেলায় বাড়ি হলেও রূপসায় বাসা ভাড়া নেন। বর্তমানে হরেক মালের ব্যবসায় নেমেছেন হয়রতসহ অনেকেই। হয়রত চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা থানার পীরপুর কুল্লা গ্রামে তার বাড়ি।
হয়রত সাইকেলে করে হরেক রকম জিনিস নিয়ে গ্রামে গ্রামে বিক্রয় করেন। দেখা যায় ১০ টাকার লবণের বাটি থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামী সেট রয়েছে। রয়েছে শিশুদের বই, খেলনাসহ বিভিন্ন খাবার রাখার জিনিস।
টাকা ছাড়া মাথার চুল, পুরোনো নষ্ট মোবাইল দিয়েও কিনতে পারেন হরেক রকমের জিনিসপত্র। নিতে পারেন আপনার পছন্দের জিনিসপত্র। দিনে পাঁচ-সাত শত টাকা লাভ হয়।
আমি গত ৬ বছর কাটাখালী থেকে বিভিন্ন গ্রামে ফেরি করে মালামাল বিক্রি করে সংসার চালিয়ে আসছি। কিন্তু বতর্মান তেমন কেনা বেচা না থাকায় কষ্টের মধ্যে আছি। যেভাবে সব জিনিসের নাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে বেচে থাকা কষ্টের হয়ে পড়েছে।
যাযাদি/এসএস