সারিয়াকান্দি পৌরবাসী ময়লা-আবর্জনা ও ড্রেনের দুর্গন্ধ অতিষ্ঠ 

প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:১৩

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দী উপজেলায় পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্র ফেলা হয় ময়লা, দুর্গন্ধে ভোগান্তি বাড়ছে 

পৌরবাসীর। এর অন্যতম কারন পৌরবাসীর অসচেতনতা ও পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা সহ পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা। এসব কারনে  সব সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয় পৌরবাসীকে।

কিছু এলাকায় ছোট ছোট কিছু ড্রেন থাকলেও সেগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে ময়লা আবর্জনার ভাগাড় হিসেবে। এমনকি টয়লেটে পরিষ্কার করে সেগুলো ময়লা পর্যন্ত ফেলা হয় এসব ছোট ড্রেনে। ফলে পানি নিষ্কাশনের ড্রেনে ময়লা আবর্জনা আটকে যায়।এসব ময়লা পচে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, মশা ও মাছির উপদ্রব বাড়ছে ও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বাতাসে। ফলে পৌরবাসী তাদের প্রত্যাশিত সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে পরিবারের সংখ্যা ৫ হাজারের মতো ও লোক সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। গড় হিসাবে প্রতিটি পরিবার থেকে প্রতিদিন দুই কেজি পরিমাণ বর্জ্য তৈরি হয়। এর বাইরে একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, একটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, চারটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার , থানা, একটি কাঁচাবাজার; স্কুল-কলেজ, মার্কেট, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন ধরনের দপ্তর থেকে প্রতিদিন প্রচুর ময়লা-আবর্জনা তৈরি হয়। প্রতিদিন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা  বিভিন্ন স্থান থেকে থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে।

জানাগেছে, সারিয়াকান্দি পৌরসভা একটি (গ) শ্রেনীর পৌরসভা এটি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় ২৫ বছর পুরানো পৌরসভা হলেও জনবল কাঠামো সহ নানা সংকটে শহরের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পুরো পৌর শহরের জন্য পরিষ্কারের জন্য পরিচ্ছন্নতা কর্মী আছে ৬  ট্রাক ড্রাইভার ১ জন।তাদের চাকরী এখনও স্হায়ী হয়নি, একটি ট্রাক সহ কয়েকটি ভ্যান রয়েছে এগুলো স্থানান্তর করার জন্য। শহরের ময়লা অপসারণের জন্য পৌরসভার নিজস্ব কোনও ভাগারের জায়গা নেই।

এসব ময়লা বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ফেলা হয়ে থাকে। এখন হিন্দুকান্দি ৪ ওয়ার্ডের বাঙ্গালী নদীর মেইন ড্রেনের মাথার ওখানে গর্তে ফেলা হয়। অপর আরেক জায়গা হলো কালিতলা শ্মশান ঘাটি থেকে সামনে যমুনা নদীর চরে ফেলা হয়। কিন্তু প্রকৃত অর্থে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় দুর্গন্ধে বাতাস দূষিত হচ্ছে। এতে দুর্গন্ধে আবাসিক এলাকার মানুষ, শিক্ষার্থী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অফিস-আদালতগামী মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। 


পৌরসভার বাসিন্দাদের দাবি, এত বছর হলো পৌরসভা হলেও ময়লা ফেলার একটি ডাম্পিং গ্রাউন্ড (ময়লা ফেলার ভাগাড়) স্হাপন করতে পারেনি কোনও মেয়র। ফলে যত্রতত্র ময়লা ফেলায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।ময়লা ও ড্রেনের আবর্জনা সঠিক সময়ে অপসারণ করা হয়না। এদিকে  পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দাবি, তারা নির্দিষ্ট সময়েই ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করেন।


সরজমিন দেখা গেছে, শহরের মূল স্থান গুলোতে অস্থায়ীভাবে ময়লার স্তূপ পড়ে আছে। পরিচ্ছন্নকর্মীরা মাঝে মধ্যে আবর্জনা ফেলতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় গেলেও অধিকাংশ স্থানের ময়লা দিনের পর দিন পড়ে থাকছে। ফলে বৃষ্টির পানিতে এসব ময়লার স্তূপ যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়ছে। সৃষ্টি হচ্ছে মশা-মাছির আবাসস্থল। 


৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শিক্ষক রফিকুল ইসলাম  বলেন,'আবর্জনার দুর্গন্ধে আমরা অতিষ্ঠ। এ বিষয়ে সাবেক মেয়র ও কমিশনারকে আমি অনেকবার বলছি এসব ময়লা আবর্জনা সঠিক ভাবে পরিষ্কার করার জন্য।কিন্তু তারা শুধু আশ্বস্ত করেছে ঠিক করবে। তাদের মেয়াদে তারা কিছুই করেনি। এসব

 রাস্তা-ঘাটে যত্রতত্র ময়লা ও আবর্জনা ফেলায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এটার সমাধান করা অতি জরুলী।


আরেকজন বাসিন্দা মো.হারুনুর রশিদ বলেন,আমার বাড়ির জানালা গুলো খুলতে পারছিনা। কারন বাড়ির জানালা ও দরজার সামনেই পানি নিষ্কাশনের ড্রেন সেখান  এত দুর্গন্ধ আসছে যে বাড়িতে টেকাই যাচ্ছেনা। এ বিষয়ে পৌরসভা ইঞ্জিনিয়ার শহিদুল ইসলামের ২ দিন ফোন দিয়ে কথা বলি। আমার অসুবিধার কথা জানাই উনি বলেন পরিষ্কার কর্মীরা যাবে আজ ৪ দিন হয়ে গেলেও তাদের দেখা পাইনি। আদো কি কোনদিন এই ড্রেন পরিষ্কার হবে?    


এ বিষয়ে জানতে সারিয়াকান্দি পৌরসভার প্রশাসক মো.শাহারিয়ার রহমান কয়েক বার ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

যাযাদি/ এস