স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে, দাম বেড়েছে আলুতে

প্রকাশ | ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:৫৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: যায়যায়দিন

সপ্তাহ ব্যবধানে চট্টগ্রাম নগরের বাজারগুলোতে কমতে শুরু করেছে শাকসবজির দাম। তবে আলুর দাম আরও বেড়েছে। পাইকারিতে মানভেদে আলুর দাম কেজিপ্রতি অন্তত তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। আর খুচরায় বেড়েছে কমপক্ষে ১০ টাকা। এছাড়া দাম বেড়েছে শসা ও ঢেঁড়সের।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) নগরের চকবাজার, কর্ণফুলী কমপ্লেক্স, রিয়াজউদ্দিন বাজার, অক্সিজেন, আতুরার ডিপো, বহদ্দারহাট,  কাজীর দেউড়িসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা কমেছে শীতকালীন সবজি ফুলকপির দাম। নগরে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে সবজিটি। কেজিতে ৪০ টাকা কমেছে বেগুন, করলা এবং কাঁচা মরিচের দাম। এই তিন সবজির মধ্যে বেগুন ৬০ এবং করলা ও কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে কেজিতে ১০ টাকা কমে পেঁপে ৫০, গাজর ১৬০, বাঁধাকপি ও মূলা ৬০ এবং ২০ টাকা কমে শিম ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে শসা ও ঢেঁড়সের। কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সবজি দুটি।

অন্যান্য সবজির মধ্যে লাউ ৪০, মিষ্টি কুমড়া ৫০, বরবটি এবং টমেটো ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।ঝিঙা, পটল, করলা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, কচুরমুখী ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে এবং কাঁকরোল ৬০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। লাল শাক, মূলা শাক, পুঁই শাক ও মিষ্টি কুমড়া শাক ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে দেখা গেছে।  

এছাড়া পাইকারি ও খুচরায় টানা দুই সপ্তাহ ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকা আলুর দর এই সপ্তাহে আরও বেড়েছে। রিয়াজউদ্দিন বাজারে গত সপ্তাহে দেশি আলু ৬০ থেকে ৬১ টাকায় বিক্রি হয়েছে। চলতি সপ্তাহে ৬২ থেকে ৬৩ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে নতুন আলু ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে ইন্ডিয়ান আলুর দাম কম রয়েছে। ইন্ডিয়ান আলু ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরায় আলুর দাম চট্টগ্রামের একেক বাজারে ও অলিগলির দোকানে একেক রকম দেখা গেছে। নগরের কাঁচাবাজারগুলোতে বিভিন্ন ধরনের আলু মানভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুদি দোকানে প্রতিকেজি ৭৫ টাকায় আলু বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন লাল আলু ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের খুচরা বিক্রেতা মো. ফারুক বলেন, আমরা আলু ৭০ থেকে ৭২ টাকা বিক্রি করছি। কিছু কিছু দোকানে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো পুরনো আলু। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম খুচরায় ৮ থেকে ১০ টাকা করে বেড়েছে।

তবে ব্রয়লার মুরগির দাম স্থিতিশীল আছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে সাইজভেদে ১৭০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা দরে। সোনালি মুরগির দামও প্রতিকেজিতে অন্তত ৫০ টাকা কমে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাকিস্তানি কক মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। অন্যান্য মাংসের মধ্যে গরুর মাংস হাড়ছাড়া ৯৫০ টাকা এবং হাড়সহ ৭০০ টাকা, খাসির মাংস ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বাজারে আকার ও ওজনভেদে ইলিশের মধ্যে জাটকা বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, মাঝারি ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা, ৫০০ গ্রামের ইলিম ১ হাজার ২০০ টাকা ও এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার টাকার ওপরে।

অন্যদিকে রুই-কাতলা মাছ ২৮০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, বড় আকারের চাষের কই ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, টেংরা মাছ ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, চিতল ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৪৫০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

মসলার মধ্যে জাতভেদে পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১১০, রসুন ২৪০ এবং আদা ২০০-২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  এছাড়া ছোট মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৫৫ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, চনার ডাল ১৪৫ টাকা, ছোলা ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি লিটার বোতলের সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা, প্যাকেটের চিনি ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা ও খোলা সরিষার তেল প্রতিলিটার ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

এদিকে, চালসহ শুকনো পণ্যের দামও গত সপ্তাহের মতোই আছে। কাটারিভোগ আতপ ২৫ কেজির বস্তা ২ হাজার ৭০ টাকা, বেতি আতপ ৩২৩০ থেকে ৩২৮০ টাকা, হাফসিদ্ধ নাজিরশাইল ২২০০ টাকা, চিনিগুড়া ১৫০ টাকা, পাইজাম আতপ ১৭৭০ থেকে ১৭৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই কেজি প্যাকেট আটা ১২৫ টাকা এবং ময়দা ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

যাযাদি/এসএস