জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, “দেশের ভিতরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান ও ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এজন্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির মান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া লিংক উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসসহ নানা বিষয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি।

সোমবার সকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সিনেট হলে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের ১০১তম সভায় সভাপতির বক্তব্যে ওইসব কথা বলেন।

সভায় উপাচার্য আরো বলেন, পাঠ্যসূচিকে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার আদলে এমন এক ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে চাই যেখানে শিক্ষার্থীরা তাঁদের মূল অধ্যায়নের সাথে আইসিটি ও সফট স্কিল বাস্তবমুখী শিক্ষার সংমিশ্রণে শিক্ষিত হতে পারে।” এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক, স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের আইসিটি, সফট স্কিল এবং অন্যান্য সংক্ষিপ্ত টেকনিক্যাল কোর্স বাধ্যতামূলকভাবে পড়াশোনা করতে হবে বলে তিনি জানান।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, "সারা দেশে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায় এলোমেলো অবস্থার সময় আমরা দায়িত্ব নিয়েছি এবং এরই মধ্যে সারা দেশে অধিভুক্ত কলেজের গভর্নিং বডির কাজ প্রায় শেষের পথে নিয়ে এসেছি।"

একাডেমিক কাউন্সিলে উপাচার্যের দিক নির্দেশনামূলক কার্যক্রমগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্সে ভর্তি পরীক্ষা চালুকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সাইবার সিকিউরিটি ও ফরেনসিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, এডভান্সড মাস্টার্স ও এডভান্সড এমবিএ প্রোগ্রামকে রেগুলার মাস্টার্স ও রেগুলার এমবিএ প্রোগ্রামে রূপান্তর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট এর অধীনে ১ বছর মেয়াদী মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিস, মাস্টার্স ইন সোসিয়াল পলিসি এবং ৬মাস মেয়াদী পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন সোসিয়াল বিজনেস কোর্স চালু, এলএলবি কোর্সের গুনগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে মনিটরিং এর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে একাডেমিক গ্রুপসমূহকে অনুষদে রূপান্তর এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত ডিপ্লোমা কোর্সে নার্সিং কোর্স সংযোজন করার জন্যে বিএমডিসি নার্সিং কাউন্সিলে পত্র প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল ও শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশ ও সিদ্ধান্তগুলো, নতুন কারিকুলাম অনুমোদন করা হয়। এছাড়া সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট পর্ষদে একাডেমিক কাউন্সিলের প্রতিনিধি মনোনয়ন দেয়া হয়।

একাডেমিক কাউন্সিল সভার শুরুতেই উপাচার্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শহীদের স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এ সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নুরুল ইসলাম, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. এ টি এম জাফরুল আযম, স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. ফকির রফিকুল আলম, স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ আশেক কবির চৌধুরী, কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ আবুদ্দারদা, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ এনামুল করিম, কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সরকারি-বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষসহ মোট ৩২জন সদস্য সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় গত ১০০তম একাডেমিক কাউন্সিলের কার্যবিবরণী নিশ্চয়ন করা হয়।

যাযাদি/ এস