জনগণ যাকে সমর্থন করবে তারাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিবে: নজরুল ইসলাম খান
প্রকাশ | ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:০৯
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, এই দেশে সবাই রাজনীতি করতে পারবেন, সবাই মত প্রকাশ করতে পারবেন, কিন্তু দেশের মালিক হল জনগণ। আল্লাহর হুকুমে এই জনগণ যাকে সমর্থন করবে তারাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিবে।
গত রবিবার সন্ধ্যায় মুক্তাগাছায় ময়মনসিংহ দক্ষিন জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির শীর্ষ তিন নেতাকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মুক্তাগাছা উপজেলা ও পৌর বিএনপি স্থানীয় নন্দীবাড়ী স্টেডিয়াম মাঠে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের অংশ গ্রহনে ‘ত্রিরতœ সংবর্ধনা’ শিরোনামে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, ‘অনেক বছর হলো আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, বার বার আগাইলো, বার বার পিছাইলো। অবশ্য এবারের মত খারাপ অবস্থা আর হয় নাই কখনও। আমাদের এই দেশে সরকার প্রধান নিহত হয়েছেন, আমাদের দেশের সরকার প্রধান জেলে গেছেন, কিন্তু পলায়া গেছে এটাই প্রথম হলো।
এরচেয়ে লজ্জার আর কিছু আছে! আসুন আমরা ভাবী যে, আমরা এমনভাবে রাজনীতি করবো এবং জনগণের সমথন পেলে আমরা এমনভাবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করবো যেন আমাদেরকে কোন দিন এমন দুর্ভাগ্যের শিকার না হতে হয়। এদেশ থেকে যেন পালিয়ে যেতে না হয়।’
অন্তরবর্তী সরকারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সরকারে যাঁরা ক্ষমতায় আছে তাঁরা তো কেউ জোর করে ক্ষমতা দখল করেনি। তাঁদেরকে তো আমরাই ক্ষমতাই বসিয়েছি। এই দেশের ছাত্র-জনতা, আমরাই তাঁদেরকে দায়িত্ব দিয়েছি এবং তাদের প্রতি সমর্থন দিয়েছি।
তাদেরকে অনুরোধ করে দায়িত্ব নিতে বলেছি তাঁরা দায়িত্ব নিয়েছে। সহযোগিতা করবো বলেছি। সহযোগিতা করে যাচ্ছি। তবে আমরা খুব খুশি হতাম যদি, তাঁরা আর একটু সক্রিয় হতেন, যদি জিনিসপত্রের দামটা তাঁরা আরেকটু কন্ট্রোল করতে পারতেন, মানুষের কষ্ট একটু কম হতো, আইনশৃংখলা পরিস্থিতি যদি আরেকটু উন্নত হতো তাহলে আরো খুশি হতাম। আমরা বলছি তাঁদেরকে সে কথা এবং আমরা এটাও বলছি জনগণের আশাআকাঙ্খা পুরনের দায়িত্ব যখন জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা নেয় তখন জনগণ তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে।
সেজন্য নির্বাচিত সরকার শক্তিশালী হয়। এখন যে সরকার আছে সেটা অন্তরবর্তীকালীন একটা অস্থায়ী সরকার।
একটা স্বৈরাচারী শাসক, একটি ফ্যাসিবাদী শাসক তারা চলে গেছে কিন্তু তাদের স্বৈরাচারী লোকজন এখনও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মধ্যে আছে। তারা নানাভাবে বিঘœ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমরা যদি সবাই সচেতন না থাকি তাহলে তারা বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে। আর তারা যদি বিশৃংখলা করতে পারে তাহলে আমাদের এই যে হাজার হাজার নেতাকর্মী, হাজার হাজার ভাই-বোন, শিশু জীবন দিলো সেটা ব্যর্থ হয়ে যাবে। সেটা যাতে না হয় সেজন্য আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি।
তিনি বলেন, আর কখনও যেন এদেশে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র হারিয়ে না যায়, আর কখনও যেন কেউ এই দেশে স্বৈরতন্ত্র বা ফ্যাসিবাদ কায়েমের সাহস না পায়, আর কখনও যেন এই দেশে আমার সম্পদ লুটতে না পারে, চাঁদাবাজী, দুর্নীতি, লুন্ঠন করে আমাদের এই দেশটাকে সর্বশান্ত না করতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে পারলেই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। সেজন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের নেতা অনেক আগেই রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচী প্রস্তাব করেছেন।
মুক্তাগাছা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান খান রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক একেএম জাহাঙ্গীর হাসানের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত নেতা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ময়মনসিংহ দক্ষিন জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির আহবায়ক আলহাজ্ব জাকির হোসেন বাবলু ও সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন।
বিশেষ অতিথি ও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাবেক এমপি আবু রেজা ফজলুল হক বাবলু, ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শামীম আজাদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনের ছেলে জুবায়ের হোসেন রানা, পৌর কিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদ, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক কামরুজ্জামান লেবু, মতিউর রহমান খোকন, হাফিজুর রহমান খান মঞ্জু প্রমুখ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে অংশ নেন। সংবর্ধিত নেতাদেরকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধনা জানান নেতাকর্মীরা।
যাযাদি/ এম