ভারতের শিলং থেকে ১৯৯০ সালে চালু হয় শিলং তীর নামের জুয়া খেলা, যা কালক্রমে অনলাইন জুয়া হিসেবে ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে বেপরোয়াভাবে ছড়িয়ে পড়েছে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন বাজারে। এজেন্ট নিয়োগ করে পাতানো এই খেলায় নিঃস্ব হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ, অন্যদিকে জুয়াড়িদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকা হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিলং তীরের অনলাইন এই জুয়া খেলার জুয়ারি ও এজেন্টরা লেনদেন করতে ব্যবহার করছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। সম্প্রতি এই অনলাইন জুয়ায় ১০ টাকায় ৭০০ টাকা, ২০ হাজার টাকায় ১৪০০ টাকা; অর্থাৎ প্রতি টাকার বদলে ৭০ গুণ লাভ, এমন আশায় হুমড়ি খেয়ে অনেকে এর মধ্যেই সবর্স্ব হারিয়ে নিঃশ্ব হয়ে পড়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভারতের শিলং থেকে জুয়ার আধুনিক এই সংস্করণ সীমান্ত পেরিয়ে বর্তমানে ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলার মহিষখলা বাজার, গোলগাঁও বাজার, বাঙালভিটা বাজার, বাকাতলা, দাতিয়াপাড়া নতুন বাজার ও হামিদপুর চৌরাস্তা এলাকায়।
প্রতিদিনই এসব স্পটে বসে জুয়ার আসর। এসব জুয়ার আসরের এজেন্টের দায়িত্ব নিয়ন্ত্রণ করেন উপজেলা বংশীকুণ্ড উত্তর ইউনিয়নের বান্দ্রা গ্রামের সুজন (৩২), একই গ্রামের উজ্জ্বল (৩১), মোহনপুর গ্রামের আব্দুল আউয়াল (৩৪), কার্তিকপুর বড়ইবাড়ি গ্রামের নয়ন মিয়া (৩১) ও বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামের মিষ্টার মিয়াসহ (৩৫) একাধিক চক্র।
এই অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এক থেকে ১০০-এর মধ্যে প্রতি সংখ্যার একাধিক টিকিট থাকে।
সেখান থেকে যেকোনো সংখ্যার টিকিট সর্বনিম্ন ১০ টাকা দিয়ে কিনে কেউ জয়ী হলে তিনি ৭০০ টাকা পান। এভাবে কেউ ১০০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনে জিততে পারেন সাত হাজার টাকা। একজন লোক একাধিক নম্বরের টিকিট কিনতে পারেন। ১০ টাকার বিনিময়ে ৭০০ টাকা পাওয়ার আশায় অনেকে প্রতিদিনই তীর খেলার টিকিট কিনে থাকেন।তবে ১০০টি সংখ্যার মধ্যে একটি মাত্র নম্বরের টিকিট ক্রেতারা বিজয়ী হয়ে থাকেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সজীব রহমান বলেন, ‘যারা শিলং তীর অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।’
যাযাদি/এআর