'২৪ এর গণঅভ্যুঙ্খানের সম্ভাবনাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে'

প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:১৩

স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী
ছবি: যায়যায়দিন

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সাধারণ সম্পাদক সহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেছেন, ‘২৪ এর আন্দোলন, গণঅভ্যুঙ্খানের মধ্য দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এই সম্ভাবনাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে।’

নোয়াখালীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, ‘এই সরকার সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের মধ্যে চললেই ঠিক, একথা যেমন ঠিক নয়। আবার এই সরকার শুধু সংস্কারই করবে, নির্বাচনের পথে হাঁটবে না এটাও ঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংস্কার এবং নির্বাচন এই দুটিকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার কারো কারো চেষ্টা আছে। কেউ কেউ আসামীকাল নির্বাচন চায়। কেউ কেউ পরশু নির্বাচন চাই, কেউ মনে করে এই আন্দোলন শুধুমাত্র একটি নির্বাচনের জন্য হয়েছে। কেউ প্রকাশ্যেই বলছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাজ হচ্ছে শুরু একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া।’

বিষয়টা কিন্তু মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেটুকু সংস্কার দরকার সেগুলো করতে হবে। কারণ এই ছাত্র জনতার আন্দোলনের যে নতুন আকাঙ্খা , যে নতুন দাবি, যে নতুন বক্তব্য জাতির সামনে আজকে তৈরি হয়েছে এই সুযোগ অতীতে তৈরি হয়নি।’

শনিবার রাতে নোয়াখালী জেলা জেএসডির নব গঠিত কমিটির পরিচতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত পরিচিতি সভায় সহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘গত ৫৪ বছরে যেসব রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল তারা জনগণের আশা আকাঙ্খার কোন মূল্য দেয়নি। তারা অতীতের প্রত্যেকটি আন্দোলন-সংগ্রামের ফলাফলকে, প্রত্যকটি রক্তের ফলাফলকে, প্রত্যেকটি আত্মত্যাগের ফলাফলকে চুরি করেছে, হাইজ্যাক করেছে, নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘৫৪ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলো আমাদেরকে যে পথে হাঁটিয়েছেন, যে পথে আমাদের সাথে বেইমানী করেছেন ২৪ এর গণঅভুঙ্খানে আবু সাইদ, মুগ্ধদের সাথে আর কাউকে বেইমানী করতে আমরা দেবেনা, দেবনা, দেবনা। ২৪ এর অভুঙ্খানের ফলাফল কোন রাজনৈতিক দল চুরি করে নিয়ে যাবে বাংলাদেশের ছাত্র জনতা এটায়র  কোনদিন হতে দিবে না।’

জেএসডি সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা অনেকগুলা বছর ধরে সংস্কারের কথা বলছিলাম। আমরা সংসদে দ্বি-কক্ষের কথা বলছিলাম, ৫০০ আসনের কথা ভলছিলাম, কিন্তু জনগণের কাছে আমরা পৌঁছাতে পারিনি। কিন্তু ছাত্রদের আজকে এই লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে ওরা পরিস্কার করেছে ৫৪ বছরের যে জঞ্জাল, যে সাংবিধানিক ক্ষমতা কাঠামো যার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র হয় না, যার মধ্য দিয়ে মানুষের অধিকার হয় না, যার মধ্য দিয়ে মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে না, তার চিকিৎসা সেবা পায় না, তার সন্তানের লেখাপড়া নিশ্চিত করেনা, তার দারিদ্রতা কমেনা এ সমস্ত বিষয়ে মূল দায়ী হচ্ছে আজকে যে প্রচলিত ক্ষমতা কাঠামো। অর্থাৎ এ সংবিধান যে সংবিধান দিয়ে দেশ চালানো হয়।’
পরিচিতি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেএসডির সিনিয়র সহ সভাপতি তানিয়া রব বলেন, ‘গত ১৭ বছরে নির্বাচনের নামে এমন নোংরামি হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশন তার জায়গায় নাই। এই জায়গাগুলো ঠিক না করে যদি কোনভাবে একটি নির্বাচন হয়, কোন একটি দল অথবা যারা নির্বাচন নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করছে তারা কি ভুলে গেছে ৫ আগষ্ট কিভাবে একটি ফ্যাসিস্ট সরকার পতিত হয়েছে। সুরাং এখন সময় অন্তবর্তীকালনি সরকার যে ইচ্ছা পোষণ করছে যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে তার মধ্য দিয়ে একটি যুগান্তকারী না হোক অনেকটুকু পথ যদি তারা এগিয়ে যায় তারপরে এ জাতি তার পখ চলতে পারবে।’

জেলা জেএসডি সভাপতি মো: ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নূর রহমান চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে পরিচিতি সভায় বিশেষ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জএসডির সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: সিরাজ মিয়া, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী।


যাযাদি/এসএস