সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটির প্রথম সভায় জেলার ১২ উপজেলা, চার পৌরসভা, ৮৮ ইউনিয়ন এবং সকল ওয়ার্ডের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গত শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্টেশনের একটি রেস্টুরেন্টের মিলনায়তনে এই রুদ্ধদ্বার সভা হয়।
গেল চার নভেম্বর সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাত বছর আগের কমিটি বাতিল করে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনকে আহ্বায়ক করে ৩২ সদস্য নতুন আহ্বায়ক কমিটি করে দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি।
এই কমিটির প্রথম চার সদস্য হলেন, দলীয় নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী, অ্যাড. মল্লিক মইন উদ্দিন সোহেল, অ্যাড. শেরে নুর আলী ও অ্যাড. নুরুল ইসলাম নুরুল।
গেল শনিবার এই পাঁচ সদস্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ভাচুর্য়ালি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের আলোচনা অনুযায়ী শনিবার (১৬ নভেম্বর) নতুন জেলা কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গৌছ ও সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মিফতাহ্ সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন। সভায় ৩২ সদস্য নতুন কার্যকরী কমিটির ৩০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রেখেছেন ২৯ জন।
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জেলা বিএনপির নতুন কার্যকরি কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান কামরুল ও জামালগঞ্জের কার্যকরি সদস্য সিরাজ মিয়া অসুস্থ থাকায় সভায় আসতে পারে নি।
দিনভর সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলার সকল ইউনিটে নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে আরও সদস্য অন্তভুর্ক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা শেষ হয়। উপজেলা ইউনিট কমিটি গঠনে অনুমোদনের স্বাক্ষর দেবার ক্ষমতা আহ্বায়ক ছাড়া অন্য আরেকজনের কথা ওঠলে, সেখানেও একাধিক নেতার নাম প্রস্তাব হয়। তবে বেশিরভাগেই দাবি করেন আহ্বায়কের পরে অন্য কাউকে এখানে ক্ষমতা দেওয়া হলে— সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুলকে যেন যুক্ত করা হয়।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাড. শেরেনুর আলী বললেন, জেলা কমিটির সভায় কমিটিতে সদস্য অন্তর্ভুক্তির জন্য ৭০ থেকে ৮০ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়। উপজেলা পর্যায়ের ইউনিট কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে স্বাক্ষর দেবার কথা ওঠলে, বেশিরভাগ সদস্য বলেছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আহ্বায়ক হিসেবে যাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, আমরা তাঁকেই নেতা হিসেবে যোগ্য মনে করছি। এর বাইরে কাউকে কমিটি অনুমোদনের জন্য স্বাক্ষর দেবার ক্ষমতা দেওয়া হলে সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরুল ইসলাম নুরুলের নাম প্রস্তাব করেন তারা।
আহ্বায়ক কমিটির প্রথম সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী বললেন, দ্রুত উপজেলা ও পৌরসভার আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হবে। ওই ইউনিটগুলোর নেতারা করবেন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি। ওয়ার্ড কমিটি গঠনের পর তারা ভোটের মাধ্যমে ইউনিয়ন কমিটি এবং ইউনিয়ন কমিটি ভোটের মাধ্যমে উপজেলা এবং উপজেলা কমিটির ভোটে হবে জেলা কমিটি। সদস্য অন্ত:ভূর্ক্তির জন্য অনেকের নাম প্রস্তাব আকারে এসেছে, এগুলো প্রস্তাব আকারে সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গৌছের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে যাবে। তাঁরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। জেলা কমিটির স্বাক্ষর ক্ষমতার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয় নি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বললেন, দিনব্যাপী সভায় সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য ৮৮ ইউনিয়নসহ উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ের ১৬ ইউনিট এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ের সকল ইউনিটের পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সদস্য অন্ত:ভূক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্তে পেঁৗছানো যায় নি। কমিটি অনুমোদনের জন্য জেলা কমিটির স্বাক্ষর প্রদানের ক্ষমতাও আগের মতই আছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গৌছ বললেন, সদস্য অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ২৯ জন বক্তাই আলাদা আলাদা নাম প্রস্তাব করেছেন। তাতে ১০০ জনের বেশি নাম এসেছে। জেলা কমিটির পক্ষে কমিটি অনুমোদনের স্বাক্ষর প্রদানের আরও একজনের কথা বলেছেন কেউ কেউ। তাও একাধিক নাম এসেছে। এগুলো রেজুলেশন আকারে কেন্দ্রে যাবে। তারা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
যাযাদি/এআর