ক্ষতবিক্ষত লোহাগাড়া পুনর্গঠনের নায়ক ইউএনও ইনামুল হাছান
প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:২২
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাছান যোগদানের পর সফলতার সাথে এক বছর পার করেছেন। ক্ষতবিক্ষত লোহাগাড়া উপজেলাকে পুনর্গঠনে অসামান্য অবদান রেখেছেন তিনি।
তিনি ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর লোহাগাড়া উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের শুরু থেকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে এক বছরেই তার কর্মদক্ষতায় উপজেলার সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি দপ্তরের কর্মকাণ্ডে ফিরে আসতে শুরু করে গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা।
নানা ষড়যন্ত্র নশ্বাৎ করে তিনি আপন গতিতে কাজ করে যাচ্ছেন। ফলে উপজেলায় জনভোগান্তি কমে গিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে জনসেবার মান।
অন্যদিকে অত্যন্ত সুদক্ষ প্রশাসনিক সমন্বয়, বিচক্ষণতার সাথে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও প্রশাসনিক কাজ করেছেন তিনি।
প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি উপজেলার একমাত্র সরকারি বিদ্যালয় দক্ষিণ সাতকানিয়া গোলামবারী সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ডিও লেটার তথা তদবির ছাড়া ভর্তি কার্যক্রম চালু করা, লম্বাশিয়ায় ১৭৮.৪৮ একর পাহাড় দখলমুক্ত এবং অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ, ক্ষমতাশীন রাজনৈতিক নেতাদের অনৈতিক তদবির গ্রহণ না করে নিরপেক্ষ এবং সচ্ছতার সাথে দায়িত্বপালন করছেন।
তিনি ট্রাকবাহী অবৈধ সিএনজি গ্যাস বিক্রয় বন্ধ এবং বটতলী শহর অবৈধ দখলমুক্ত করেন। প্রত্যেক ইউনিয়নে খেলার মাঠ নির্মাণসহ উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য তার পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন গেইট, মিনি পার্ক, সুইমিংপুল, উপজেলা প্রবেশমুখে পরিত্যাক্ত স্থানে ফুলের বাগান।
এছাড়াও যৌতুক- বাল্যবিবাহ রোধ, বাজার মনিটরিং, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, পাহাড় কাটা, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ও ইভটিজিং প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
জানা গেছে, তিনি এক বছরে উপজেলায় পাহাড় ও কৃষি জমির টপসয়েল কাটার দায়ে ৫৩টি মামলায় সাড়ে ৪৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু জব্দ করে নিলামে বিক্রি করে দেড় কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যনের স্থলে প্রশাসকের দায়িত্বভার গ্রহণ এবং উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ও মাদরাসা-কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
উপজেলায় শান্তি-শৃংখলা সুরক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী কমিটি, শিক্ষা কমিটি, বাজার মনিটরিং কমিটি গঠন করেছেন। ত্রাণ কার্যক্রম তদারকি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য, সমাজসেবা বিভাগ, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার মাধ্যমে নারী-শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ও উন্নয়ন, আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ সরকারের সেবামূলক বিষয়গুলো নিবিড় তদারকি করছেন ইউএনও ইনামুল হাছান। এমণিভাবে লোহাগাড়াকে একটি মডেল উপজেলায় উন্নীতকরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। এতে সন্তুষ্ট সর্বস্তরের জনগণ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী লোহাগাড়া উপজেলার আমীর অধ্যাপক আসাদুল্লাহ ইসলামাবাদী বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী তাঁর সাথে সরাসরি যোগাযোগ ও বিভিন্ন প্রশাসনিক কার্যক্রম দেখার সুযোগ হয়েছে। স্বল্প সময়ে যতটুকু অবলোকন করেছি তিনি একজন দক্ষ, চৌকস প্রশাসক।
লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নাজমুল মোস্তফা আমিন বলেন, ইউএনও মুহাম্মদ ইনামুল হাছান সততা কর্মদক্ষতায় উপজেলা পরিষদের সরকারি-বেসরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা এনেছেন। এটি অব্যাহত থাকা দরকার।
সদস্য সচিব সাজ্জাদুর রহমান বলেন, সরকারের একজন দায়িত্বশীল প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে ইউএনও মুহাম্মদ ইনামুল হাছানের সততা ও কর্মদক্ষতায় উপজেলা পরিষদের সরকারি - বেসরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা ফিরে আসতে শুরু করেছে।
লোহাগাড়ায় ইউএনও হিসাবে এক বছর পূর্তির অনুভুতি জানতে চাইলে যায়যায়দিনকে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাছান বলেন, যোগদানের পর থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছি লোহাগাড়া উপজেলাকে একটি মডেল উপজেলায় রূপান্তর করতে। জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে সরকারের সকল কর্মকাণ্ড সুন্দরভাবে পালন করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি, যেন সরকারের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন থাকে।
যাযাদি/এআর