শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সাঁথিয়ায় বিএনপি'র দু-গ্রুপের ব্যাপক সংঘর্ষ আহত ২০

সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
  ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:১৬
ছবি: যায়যায়দিন

পাবনার সাঁথিয়ায় আহ্বায়ক কমিটি গঠনে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে পকেট কমিটি আখ্যা দিয়ে মিছিল করার সময় বিএনপি'র দু গ্রুপের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় ১৫-২০ জন।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে সাঁথিয়ার প্রাণ কেন্দ্র সরকারি কলেজ মাঠ থেকে পূর্ব ঘোষিত একটি মিছিল বের করার প্রস্তুতি নেন ভিপি শামসুর রহমানের সমর্থক গোষ্ঠী। তার অনেক আগেই আহ্বায়ক খায়রুন নাহার খানম মীরু এবং সালাউদ্দিন খান তাদের কর্মী বাহিনী নিয়ে শামসুল গ্রুপের মিছিল কে প্রতিহত করার জন্য লাঠি সোটা নিয়ে প্রস্তুতি নেন।শামসুল গ্রুপের দুই চারজন নেতাকর্মী জড়ো হওয়ার সাথে সাথেই পিটিয়ে মাঠ পরিষ্কার করে দেন তারা। কিছুক্ষণ পর ভিপি শামসুর রহমানের ৩/৪ হাজার সমর্থক এসে ২ মিনিটের মধ্যেই আহ্বায়ক খায়রুন নাহার খানম মীরু এবং সালাউদ্দিন খান ও তাদের কর্মী বাহিনীকে আউট করে দিয়ে মিছিল নিয়ে বাজারের কয়েকটি সড়ক পদক্ষিণ করেন ভিপি শামসুর রহমানের সমর্থক গোষ্ঠী। পরে সরকারি কলেজ মাঠে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন ভিপি শামসুর রহমানের সমর্থক গোষ্ঠী।

এ সময় ‘হাবিবের দুইগালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘মাসুদের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘অবিলম্বে পকেট কমিটি, বাতিল করো করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

প্রতিবাদ সমাবেশে অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, ১৪ নভেম্বর একটি প্যাডের মাধ্যমে হঠাৎ করে কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে অনৈতিক সুবিধা নেওয়া হয়েছে, ঘুষ-বাণিজ্য করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের মাঠের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত মো. শামসুর রহমান ওরফে ভিপি শামসুর রহমানের প্রতি রাজনৈতিক অবিচার করা হয়েছে। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বয়ে যাচ্ছে সমালোচনার ঝড়।

আহ্বায়ক কমিটিতে যাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়েছে তারা কেউই দলের অসময়ে সাঁথিয়ায় রাজনীতির মাঠে ছিলেন না। তার মাঝে আহ্বায়ক খায়রুন নাহার খানম মীরু তিনি অন্য উপজেলার বাসিন্দা। আর সদস্য সচিব তিনি দীর্ঘদিন একজন বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত ছিলেন। হঠাৎ করে উড়ে এসে জুড়ে বসার মতো। এটা দ্রুত বাতিল করা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। প্রয়োজনে সাঁথিয়াকে অচল করে দেওয়া হবে। এই পকেট কমিটি সাঁথিয়াবাসী প্রত্যাখান করেছে বলে জানান বক্তারা।

এ বিষয়ে, করমজা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ মজনু বলেন, আমরা ভিপি শামসুর রহমানের কাঁধে কাঁধ রেখে হাতে হাত রেখে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। তখন শামসুর রহমান ছাড়া কোনো নেতাকেই আমরা কাছে পাইনি। আজকে তাকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না এটা হতে পারে না। বিএনপিতে ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজদের স্থান নেই। আমরা চাই দ্রুত এই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হোক।

নব গঠিত সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব লিখন মোল্লা বলেন, আন্দোলন সংগ্রামে এবং কর্মীদের দুর্দিনে আমরা ভিপি শামসুর রহমানকেই কাছে পেয়েছি। এমন একজন ত্যাগী নেতাকে অবমূল্যায়ন করা হবে তা কল্পনা করা যায় না। আমি মনে করি তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর্থিক লেনদেনের প্রশ্নই আসে না।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে খাইরুন নাহার খানম মীরুকে আহ্বায়ক ও ভিপি শামসুর রহমানকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করে ২৪ সদস্য বিশিষ্ট সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির গঠনের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে