ভবদহ বিলপাড়ের প্রায় ১০ হাজার দুর্দশাগ্রস্থ মানুষ পেলো ফ্রি চিকিৎসা সেবা

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:০২

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

মরণফাঁদ অভিশপ্ত ভবদহের করালগ্রাসে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঘরে থাকার উপায় নেই। চলছে গো খাদ্যের সংকট। অবস্থা সম্পন্নরা বাড়ির ছাদে চুলা বানিয়ে আহারের জোগাড় চলে। আর দরিদ্রদের আহারের জোড়াড় হয় রাস্তায় টোংঘরে। ভবদহ অঞ্চলে বন্যাকবলিত মানুষের মৌলিক চাহিদায় চরম ব্যাঘাত ঘটছে। এক কথায় এ অঞ্চলে চলছে মানবিক বিপর্যয়। বাশের সাঁকো ও ডিঙ্গী নৌকায় চলে পারাপার।


মানবিক বিপর্যস্ত মানুষের রোগ বালাইয়ে চিকিৎসা নেওয়া যেন তাদের কাছে বিলাসিতা। জলাবদ্ধতার শিকার ভবদহ বিলপাড়ের মানুষের চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে এলো ঢাকাস্থ মণিরামপুর সমিতি। এতে দুর্দশাগ্রস্থ মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে পেরে কিছুটা হলেও উপকৃত হচ্ছেন।

যশোরের মণিরামপুরের জলাবদ্ধ কুলটিয়া, নেহালপুর, হরিদাসকাঠি, মনোহরপুর, শ্যামকুড় ও খানপুর ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এরমধ্যে কমপক্ষে দশ হাজার পানিবন্দী মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার টার্গেট নিয়ে ঢাকা থেকে ছুটে এসেছেন ৪৭ জন চিকিৎসক। চিকিৎসকরা রোগীদের উপদেশ দেয়ার পাশাপাশি ক্যাম্পে অস্থায়ীভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু হয়েছে। সেখানে রোগ নির্ণয়ের জন্য বিনামূল্যে আল্ট্রাস্নো, ইসিজিসহ ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে।

ঢাকাস্থ মণিরামপুর সমিতির উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী (শুক্রবার ও শনিবার) চিকিৎসা সেবার উদ্বোধন করা হয়। শুক্রবার উপজেলার কালীবাড়ি শাহিদা সুলতানা বালিকা বিদ্যালয় মাঠে উদ্বোধনী দিনে সমিতির সাধারন সম্পাদক ডঃ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক মোজাম্মেল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সমিতির নেতা অধ্যাপক ডঃ হুমায়ুন কবীর, ডাঃ বুলবুল কবীর, আব্দুল্লাহ আল মামুন, শফিকুল বারী, কাজী জহুরুল হক বুলবুল, আব্দুল কাদের ও আমিনুর রহমান প্রমূখ।

শনিবার সমাপনী দিনে বন্যাকবলিত শ্যামকুড় ইউনিয়নের নাগোঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। এদিন অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে আসতে দেখা দেয়। এ সময় লাঠি ভর দিয়ে আসা অশতিপর বৃদ্ধা আছিরন বেগম বলেন, ডাক্তাররা এমনিতে (বিনার্মল্যে) দেখবে শুনে আইছি, মেলা (বেশি) ভীড় দেহে ভাবতিছি কি এইরে ডাক্তারের কাছে যাবো।

তবে, চোখ ও হার্টজনিত রোগী এসে ফিরে যেতে দেখা দেয়। আয়োজকরা বলছেন চোখ ও হার্ট স্পর্শকাতর বিষয়। এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা ক্যাম্পে করা দুরুহ। ভবিষ্যতে এ ধরনের রোগীদের বিষয়টি মাথায় নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে সমিতির সাধারন সম্পাদক ডঃ মিজানুর রহমান বলেন, সমিতি প্রতিষ্ঠালগś থেকেই আর্তমানবেতর সেবায় নানামূখী কাজ করে আসছে। মেডিকেল ক্যাম্পে ঢাকার ৪৭ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষের চিকিৎসা সেবার টার্গেট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ ঔষধ প্রদান করা হচ্ছে।

যাযাদি/এসএস