চুয়াডাঙ্গায় আলোচিত টিকটকার মুন্নি খালেদা আক্তার মুন্নি হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তাকে ধর্ষনের পর হত্যা করেছে দুবৃত্তরা।
আজ শনিবার দুপুর একটায় পুলিশ সুপারের কনফারেন্স হলে আয়োজন সংবাদ সন্মেলনে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সন্মেলনে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলাম জানান, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা থানাধীন ভাংবাড়ীয়া গ্রামের খোয়াজ আলী শেখ এর কন্যা খালেদা আক্তার মুন্নি(১৮) গত ৯ নভেম্বর দুপুর আনুমানিক ১২ টায় হাটবোয়ালিয়া বাজারে কেনাকাটা করার উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বের হয়। সে একই দিন সন্ধ্যা আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টায় তার মা’কে জানায় কেনাকাটা করতে রাত হয়েছে আলমডাঙ্গা খালার বাসায় থাকবে। পরবর্তীতে গত ১৪ নভেম্বর সকাল ৮ টায় অজ্ঞাতনামা মহিলার অর্ধগলিত(পোকা ধরে গেছে) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর তার পরিবারকে সংবাদ দিলে পরিবার ঘটনাস্থলে পৌছে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ট্যাটু দেখে লাশটি খালেদা আক্তার মুন্নি’র মর্মে সনাক্ত করে।
এ ঘটনায় মুন্নির মা বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা করে। চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা,বিপিএম- তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার মূলরহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায়
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলাম ও আনিসুজ্জামানের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনার মূলরহস্য উদঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষে মাঠে নামে। অবশেষে ডিবি, চুয়াডাঙ্গার চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে ১৫ নভেম্বর রাত আড়াইটায় ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামীদের নিজ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করে।
ঘটনার বিষয়ে আসামী মানিক আলী ওরফে মানিক মুন্সি(২২) জানায়, গত ৬ নভেম্বর আসামী ও তার বন্ধুরা বড়গাংনীতে মুন্নির সাথে টাকার বিনিময়ে অনৈতিক সম্পর্ক করার জন্য নিয়ে আসলে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ব্লাকমেইল করে বিশ হাজার টাকা আদায় করে। অতঃপর আসামী মানিক মুন্সি মুন্নিকে উপর রাগের বশবর্তী হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে। আসামী মানিক মুন্সি গত ৯ নভেম্বর বিকালে ফোনকলের মাধ্যমে আসামী মানিক মুন্সির সাথে সারারাত বিশ হাজার টাকার বিনিময় অনৈতিক কাজ করতে সম্মত হয়। সন্ধ্যা আনুমানিক সন্ধ্যা ৭ টায় মুন্নি সদর থানাধীন বোয়ালমারি নীলমনিগঞ্জ পিটিআই মোড়ে পৌঁছালে আসামী মানিক মুন্সি তার অপর সহযোগী আসামী পারভেজ মুন্সি ওরফে স্বপন(১৯) এর মোটরসাইকেল এ নিয়ে আসতে বলে। আসামী পারভেজ মুন্সি ওরফে স্বপন পিটিআই মোড় থেকে ভিকটিমকে রিসিভ করে বোয়ালমারি শ্বশানের রাস্তার ফাঁকা জায়গায় আসামী মানিক মুন্সির নিকট নিয়ে আসে। এরপর আসামীরা পানবরজের পিছনে জঙ্গলে ভিকটিমের সাথে পালাক্রমে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। আসামী পারভেজ মুন্সি ওরফে স্বপন ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলে আসামী মানিক মুন্সি একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে মুন্নিকে পাঁচ হাজার টাকা দিলে সে টাকা নিতে অসম্মতি প্রকাশ করে এবং চিৎকার করলে তাকে গলা চেপে ধরলে উপুড় হয়ে পড়ে গেলে পিঠের উপর বসে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ওড়না দিয়ে হাত বেধেঁ জঙ্গলের ফেলে রেখে তার শপিং ব্যাগ ও জুতা নদীতে ফেলে দেয়।
ঘটনার বিষয়ে আসামীরা বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। গ্রেফতার আসামীরা হলো- চুয়াডাঙ্গা হাজরা হাটি গ্রামের শেখ পাড়ার টোকন আলীর ছেলে মানিক আলী ওরফে মানিক মুন্সি এবং একই গ্রামের মইদুল ইসলামের ছেলে পারভেজ মুন্সি ওরফে স্বপন।
যাযাদি/এসএস