রংপুরের মিঠাপুকুরে ঝগড়া থামাতে গিয়ে সোহান (২৪) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। নিহত যুবক উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের পাইকান গ্রামের মৃত. শাহাজাহান আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় রাতেই মিঠাপুকুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর দীর্ঘ চারঘন্টার প্রচেষ্টায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, রিজার্ভ ফোর্সের সহায়তায় অবরুদ্ধ তিন অভিযুক্ত সহ মোট চারজনকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয় এবং সোহানের মরদেহ পুলিশ পোষ্ট মর্টেমের জন্য উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, নিহত সোহানের প্রতিবেশী মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী জারুল্যাবাজ গ্রামের আব্দুস সালামের মেয়ে সাদিয়ার প্রায় ৯ মাস পূর্বে ঘটকের মধ্যস্থতায় বিবাহ হয়। বিয়ের পর মোহাম্মদ আলী দাবি করেন, তার স্ত্রী সাদিয়া চোখে দেখেনা। এই নিয়ে ওই দম্পত্তি এবং উভয় পরিবারের মাঝে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার জামাই আলীর বাড়িতে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন আসেন। বিকেলের দিকে আলীর শ্বশুর মেয়ে জামাইয়ের সাথে পারিবারিক কলহের বিষয়ে আলাপচারিতার একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে জামাই আলীকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। এসময় আলীর চিৎকার শুনে এগিয়ে যান প্রতিবেশী সোহান। সেখানে গিয়ে সোহান লোকজনের হাত থেকে আলীকে রক্ষা করতে গেলে আলীর শ্বশুর বাড়ি থেকে বিচারে আসা লোকজন সোহানের উপর চড়াও হয় এবং সোহানকে ঘুসি মারেন। এতে সোহান ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সোহানকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোহানের মৃত্যুর বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শত-শত জনতা ওই এলাকায় উপস্থিত হয়ে বিচারে আসা আলীর শ্বশুর আব্দুস ছালাম, সাদিয়া,ওয়ারেছা সহ তিনজনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে তাদের প্রায় চার ঘন্টা পর উত্তেজিত জনতার হাত থেকে পুলিশ তাদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এসময় এক শিশুকেও পুলিশ জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক যায়যায়দিনকে বলেন, এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে কাজ করছে পুলিশ।
যাযাদি/এআর