শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১

কটিয়াদীতে স্বামীকে পরিকল্পিত হত্যা স্ত্রী আটক

কটিয়াদী(কিশোরগঞ্জ)প্রতিনিধি
  ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:৩৩
ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে শাহীন (৩৫) নামে স্বামীকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী ঝুমুর উরুফে ঝর্ণা আক্তারের বিরুদ্ধে।

ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে পৌর এলাকার পশ্চিমপাড়া মহল্লার সৌদিয়া ভবনের পাঁচতলা ভাড়া বাসায়।

শাহিনের স্ত্রী ঝর্ণা আক্তারকে আটক করছে কটিয়াদী মডেল থানা পুলিশ। নিহত শাহীন উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের পাইকশা গ্রামের পল্লী চিকিৎসক মো. তৈয়ব উদ্দিনের একমাত্র ছেলে।

জানা যায়, শাহীন এক বছর পূর্বে কটিয়াদী পশ্চিমপাড়া মহল্লার আবুল হোসেনের মেয়ে দুই সন্তানের জননী ঝর্ণা আক্তারকে ঘটনাক্রমে দ্বিতীয় বিয়ে করতে বাধ্য হয়। শাহীন তিন কন্যা সন্তানের জনক। দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা আক্তারকে বিয়া করার পর থেকেই পশ্চিমপাড়া মহল্লায় স্ত্রীর বাবার বাড়ির পাশে ভাড়াবাসা সৌদিয়া ভবনের পাঁচতলায় স্বামী শাহীনকে নিয়ে বসবাস করেন। দুজনেই স্থানীয় ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে চাকরি করে। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে প্রথম স্ত্রী ও পিতা মাতার সাথে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। প্রথম স্ত্রী সন্তানদেরকে নিয়ে পৃথক বাসায় থাকে। মাঝে মাঝে সন্তানদেরকে দেখার জন্য পৌর এলাকার কামারকোনায় প্রথম স্ত্রীর বাসায় যেতো।

বুধবার সন্ধ্যায় সন্তানদেরকে দেখার জন্য প্রথম স্ত্রীর বাসায় যায়। সন্তানদের দেখতে যাওয়া নিয়ে ঝর্ণা আক্তার তার স্বামী শহীনের সাথে ঝগড়া করে। রাতে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে গভীর রাতে তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে। ভোর চারটার দিকে ঝর্ণার মা বাসার মালিক শাহ আলমকে ডেকে তুলে বলে মেয়ের জামাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে হাসপাতালে নিতে হবে।

বাসার মালিক শাহ আলম জানান, শাহীন ও ঝর্ণা আমার বাসায় ভাড়া থাকেন। ভোররাতে ঝর্ণার মা আমাকে ডেকে তুলে বলে মেয়ের জামায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে। পাঁচতলায় গিয়ে দেখি শাহীন ফ্লোরে পড়ে আছে তার পাশে স্ত্রী বসে আছে। পরে মা মেয়ে তাকে তুলে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়।

দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার স্বামী আত্মহত্যা করেছে বলে দাবী করলেও প্রথম স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া ও শাহীনের পিতা মাতা পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে বলে দাবী করেন। তারা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেন।

শাহীনের পিতা পল্লী চিকিৎসক মো. তৈয়ব উদ্দিন জানান, তিন সন্তান রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে আমাদের সাথে ছেলের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। আজ ভোররাতে শাহীনের দ্বিতীয় স্ত্রী মাকে মোবাইল ফোনে জানায় আপনার ছেলে অসুস্থ হাসপাতালে নিয়ে আসতেছি। ছেলে প্রায় সময় তার মাকে বলতো ঝর্ণা তার বন্ধু বান্ধব নিয়ে ছেলেকে নির্যাতন করতো। এতে সে মানসিকভাবে অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে কিছুদিন পূর্বে বিদেশ যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করেছে। কিন্তু ঝর্ণা বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেয়নি। সামান্য ছুতানা নিয়ে শাহীনের সাথে ঝাগড়া বিবাদ করতো।

আমার ছেলেকে পরিকল্পিত হত্যা করেছে দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা।

কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেহেদী হাসান জানান, ভোর ৫টায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তখন ইসিজি এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা দেখা যায় বেশ কিছুক্ষণ আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইন চার্জ মো.তরিকুল ইসলাম বলেন, শাহীনের লাশ হাসপাতাল থেকে নিয়ে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তার গলায় নিচে একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। স্ত্রী ঝুমুর উরুফে ঝর্ণাকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে