পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় আবাসিক হোটেল সাগরে হামলা চালিয়েছে কুয়াকাটা পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জলিল চুকানী ও তার লোকজন। রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে এমন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে ওই হোটেলে।
বুধবার(১৩ নভেম্বর) রাত আটটার দিকে কুয়াকাটা মহাসড়ক লাগোয়া আবাসিক হোটেল সাগরে এ ঘটনা ঘটে। এসময় হোটেলে থাকা পর্যটকরা আতঙ্কিত হয়ে ডাক চিৎকার দিয়ে আশ্রয় নেয় আশপাশের বিভিন্ন হোটেলে। এ ঘটনায় হোটেলে অবস্থান করা পর্যটকরা অনেকই হোটেল ছেড়ে অন্য হোটেলে চলে গেছেন বলেও জানা হোটেল ম্যানেজার।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসাকে কেন্দ্র করে,কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সদস্য মোঃ শিরু মোল্লার উপর হামলা চালায় কুয়াকাটা পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জলিল চুকানী ও তার লোকজন। এ হামলার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় জলিল চুকানী,তার ভাই মানিক চুকানী,শ্রমিক দল নেতা জসিম সহ তার লোকজন মোটরসাইকেল যোগে এসে দাড়িয়ে থাকা শিরু মোল্লার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় শিরু মোল্লার সাথে থাকা বিএনপি কর্মী বাইজিদ খানকেও বেধড়ক মারে শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনার জানাজানি হলে উভয় পক্ষকে নিয়ে দলীয় ভাবে মিমাংসা করার জন্য শালিশের মাধ্যমে সমাধান করতে সময় নির্ধারণ করে কুয়াকাটা পৌর বিএনপি। কিন্তু শালিসি শুরু হলে নির্দিষ্ট সময় এবং স্থানে শ্রমিক দলের কেউ আসেনি। এরপর শালিশী শেষ হলে রাস্তায় বের হতেই পৌর বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা হয় শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জলিল চুকানীর সঙ্গে। শালিশিতে উপস্থিত হয়নি কেন এমন প্রশ্নে শুরু হয় হট্টগোল। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীদের তোপের মুখে শটকে পড়ে শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনার পঁনেরো থেকে বিষ মিনিট পরে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি মোটরসাইকেল বহর এসে কুয়াকাটা পৌর বিএনপির ১নং সহ-সভাপতি আলহাজ্ব এমএ মান্নান চৌধুরীর মালিকানাধীন আবাসিক হোটেল সাগরে হামলা চালায় মানিক চুকানী ও তার লোকজন। এ সময় হোটেলে থাকা পর্যটকরা আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করে। এমনটাই দাবি করেন হোটেল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয় কুয়াকাটা পৌর বিএনপির ১নং সহ-সভাপতি আলহাজ্ব এমএ মান্নান চৌধুরী বলেন, শ্রমিক দল বিএনপির একটি অঙ্গসংগঠন। কিন্তু কুয়াকাটা পৌর শ্রমিক দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীদের আচার-আচরণ ও বিভিন্ন কর্মকান্ড বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করে। তারা পৌর বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীদের সঙ্গে বেয়াদবি মূলক আচরণ করছে। শ্রমিক দলের কেউ কখনোই মূল দলের মানুষের গায়ে হাত দিতে পারে না। আমি এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যাবস্থা নেয়ার সুপারিশ করবো। আমার হোটেলে কেন হামলা চালিয়েছে সেজন্য আমি আইনি সহায়তা নিব।
কুয়াকাটা পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জলিল চুকানী বলেন, প্রথমে আমাকে হোটেল সাগরের সামনে আটকানোর চেষ্টা করলে আমি নিজেকে বাঁচাতে ওখান থেকে দৌড়ে পাশে হোটেল গাজি প্যালেসে যাই। পরে আমি ওখান থেকে বের হওয়ার জন্য আমার শ্রমিক দলের নেতাকর্মীদের আসতে বলি এবং তারা আসলে আমি বের হয়ে চলে যাই। এর বাইরে ওখানে আর কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি আরো বলেন, আমার নামে যে সমস্থ অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। আমি বা আমার কোন লোকজন হোটেলে হামলা চালায়নি।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর পেয়ে সাথে সাথে ফোর্স পাঠাই এবং পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হই। হোটেল সাগরে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যাযাদি/ এসএম