বিদ্যালয়ের জমি দখল করে ঘর-বাড়ি নির্মাণকারী সেই প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত, ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব গ্রহণ

প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৫৪

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুলের জমি কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে ঘর-বাড়ি নির্মাণ ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তে স্বেচ্ছাচারিতা, আর্থিক অনিয়ম ও বিদ্যালয়ের স্বার্থ পরিপন্থী অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক শতীশ চন্দ্র রায়কে তিরস্কারসহ চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সাথে জ্যৈষ্ঠ শিক্ষক আমিনুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে মো: আনিছুর রহমানকে দায়িত্ব প্রদান করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।

রবিবার (১০ নভেম্বর) সকালে বিদ্যালয় মাঠে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে আনিছুর রহমানকে ফুলেল শুভেচ্ছায় স্বাগত জানান ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। এসময় স্কুলের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষার মানোন্নয়নে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি উপস্থাপনা করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ০৫ আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জমি দখল, আর্থিক অনিয়ম ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সতীশ চন্দ্র রায়ের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। ইতিপূর্বে এসব অভিযোগের প্রতিকার চেয়েও তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রছায়ায় পার পেয়ে যান অভিযুক্ত এই প্রধান শিক্ষক। স্থানীয় জনসাধারণের উদ্যোগে জমি সংগ্রহ ও অবকাঠামো নির্মাণ করে সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী বিদ্যালয়টি নির্মাণ করা হয়। তবে বিদ্যালয়ের জমি সংরক্ষণ না করে প্রধান শিক্ষক হওয়া স্বত্বেও বিদ্যালয়ের জমি বিদ্যালয়ের নামে সংশোধনী রেজিস্ট্রি না নিয়ে অন্য ওয়ারিশের কাছে নিয়মবহির্ভূত ভাবে তার নিজ নামে ৪৮ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়। এই অংশে স্কুলের খেলার মাঠ ছিল। এই প্রধান শিক্ষক কৌশলে জমি হাতিয়ে নেওয়ার পরে এখন আধাপাকা বাড়ী নির্মাণ করে তার নিজ দখলে নিয়ে বসবাস ও দোকান ভাড়া দিয়েছেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের জমি ও পুকুর নিয়ম ছাড়াই গোপনে অর্থের বিনিময়ে এক ব্যক্তিকে দিয়েছেন। পরে গত ২৭ আগস্ট স্কুলের জমি হাতিয়ে বাড়ি নির্মাণ ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তে স্বেচ্ছাচারিতা, আর্থিক অনিয়ম ও বিদ্যালয়ের স্বার্থ পরিপন্থী অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক শতীশ চন্দ্র রায়কে গত ৪ নভেম্বর তিরস্কারসহ চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়। সেই সাথে সহকারী শিক্ষক আনিছুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

দায়িত্ব প্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান বলেন, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। স্কুলের উন্নয়ন ও শিক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে আমার সাধ্যমত চেষ্টা থাকবে। এতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।


যাযাদি/এসএস