বকেয়া বেতনের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রায় ২৮ঘন্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকার টিএনজেড গ্রæপের শ্রমিকরা। তারা জানিয়েছেন, বারবার বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেয়া হলেও তারা মানা হয়নি, বেতন ছাড়া মহাসড়ক ছাড়বেন তারা। এদিকে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ২৫টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকার টিএনজেড গ্রæপের শ্রমিকরা গতকাল (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের এই দুই মাসের বেতনের জন্য ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে অবস্থান করছে। তাদের একটাই কথা বেতন না পাওয়া পর্যন্ত আমরা হাইওয়ে রোড ছাড়বো না।
এই শ্রমিকদের একাধিকবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনসহ মালিককের সাথে কথা বলে, ওনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সর্বশেষ আমি তাদের (শ্রমিকদের) বেতন অবশ্যই পরিশোধ করবো। মালিকপক্ষকে একাধিকবার সময় দেয়া হয়েছিল, ওনারা বার বার বেতন পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন, যে কারণে শ্রমিকরা এখন আর আমাদের কথা আর বিশ্বাস করে না। আমরা কোন মুখে ওদেরকে বলবো, তোমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করো, তোমাদের একটা ব্যবস্থা আমরা করে দিবো। শ্রমিকদের মতই মালিকের প্রতি আমাদেরও আস্থা নেই। যে কারণে ওরা গতকাল থেকে বসে আছে। আমরা তাদের একাধিকবার বুঝানোর চেষ্টা করেছি, আমাদের অফিসে এসে বসো, অবস্থান নাও। কিন্তু ওরা নাছোড় বান্দা মহাসড়ক ছাড়বে না। এটাকে কেন্দ্র গতকাল সন্ধ্যাও ওদেরকে বুঝোনো হয়েছে, রাতেও চেষ্টা করেছিলাম ওরা যায়নি। আজকে তারা আছে। এই ধারাবাহিকতায় টিএনজেড এর শ্রমিকরা কলম্বিয়া, ভোগড়া বাইপাস, চৌরাস্তায় এদিকে যে কয়টি কারখানার আছে এখন তারা ছুটি দিয়ে দিয়েছে। শ্রমিকরা ভেতরে ঢুকতে পারছে না।
তিনি বলেন, আমরা আবারো চেষ্টা করতেছি। একটু আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এসেছিল, আমরাসহ কথা বলেছি। আশা করি এটার সমাধান হবে। এটা নিয়ে আমাদের সিনিয়র স্যাররা আছেন, বিজিএমইএ, শ্রম অধিদপ্তর কাজ করছে।
মহাসড়কের উপরের কেন এত ক্ষোভ?- এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আমার ধারণা ওরা মনে করে মহাসড়ক বন্ধ করতে পারলে মালিকের উপর চাপ আসে, টাকার ব্যবস্থা করতে হয়। তাদের এরকম একটা ধারণা করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, প্রতিষ্ঠান দুজন মালিক। বর্তমানে একজন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যিনি দেশে আছেন তার সাথে আমার কথা হয়েছে। তিনি মন্ত্রণালয়ে বসে আছেন। যেখানে এক্সপোর্ট বিল্প আপ ফান্ড আছে। এখানে ওনার কিছু টাকা আছে। ওনি চাচ্ছেন এই টাকা যদি ওনাকে ব্যবস্থা করে দেয়া হয়, ১১-১২ কোটি টাকার মতো তাহলে ওনি এই দুই মাসের বেতনের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। ওনার জরুরী মুহুর্তে ১১ কোটি থেকে ১২ কোটি টাকার দরকার বলে ওনি আমাকে জানিয়েছেন।
যাযাদি/এসএস