সাত মাস বয়সের শিশু সন্তানকে দত্তক দিয়েছেন বাবা-মা। বিনিময়ে নিয়েছেন ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু এক মাস পার হতেই সেই সন্তানকে ফিরে পেতে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তারা। অভিযোগ পেয়ে থানা পুলিশ ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে।
এমনি ঘটনা ঘটেছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায়। দত্তক দেওয়া দম্পতির দাবী সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেছেন তারা টাকার বিষয়েও জানতেন না,তাদের ব্যাগে টাকা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল ষড়যন্ত্র করে।
জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের কেট্টা গ্রামের রকিবুল হাসান রাব্বি ও সসলিমা আক্তার দম্পতির এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
কিন্তু অভাবের তাড়নায় সেই সন্তানকে লালন পালন করতে না পেরে নিরুপায় হয়ে সেই শিশু সন্তান কে দত্তক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। পরবর্তীতে একই উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের জাকিরপাড়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম ও ও মালেকা খাতুন নিঃসন্তান দম্পতি চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চল্লিশ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে দত্তক নেন।
কিন্তু ১ মাস ৭ দিন পার হতেই গতকাল বুধবার (৬ নভেম্বর) থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রকিবুল হাসান রাব্বি ও সসলিমা আক্তার দম্পতি। অভিযোগ পেয়ে থানা পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। আজ বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) দুপুরে দুই পক্ষের আলোচনার মধ্যে দিয়ে দত্তক দেওয়া প্রথম বাবা-মায়ের কাছেই শিশুটিকে ফেরত দেয় পুলিশ।
দত্তক নেওয়া নিঃসন্তান আমিনুল ইসলাম বলেন,১৪ বছর ধরে আমার বাচ্চা নাই তাই একটা ছেলে বাচ্চা দত্তক নিছিলাম এবং তাদের ৪০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম কিন্তু গতকাল পুলিশ গিয়ে বাচ্চাসহ আমাকে থানায় নিয়ে আসে এবং বাচ্চা তাদের দিয়ে দেয়। আমার টাকাও ফেরত দেয়নি বাচ্চাও। আমার স্ত্রী অসুস্থ এখন তাকেই বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়েছে। নিঃসন্তান দম্পতির স্বজন আব্দুল আজিজ বলেন,পুলিশ বাচ্চা তাদের দিতে বলেছে আমরা দিয়ে দিছি। আমাদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা তারা ফেরত দেয়নি।
তিনি আরও বলেন,ভাতিজা আমিনুল ইসলাম ও বউ মালেকা খাতুনর বিয়ের পর একটি বাচ্চা হয় কিন্তু আড়াই বছর বয়সে পানিতে ডুবে মারা যায়। পরবর্তীতে সময়ে আর বাচ্চা হয়নি প্রায় ১৪ বছর। এমন অবস্থায় মালেকা বাচ্চার জন্য কান্নাকাটি করে। অবশেষে একটা বাচ্চা লালান পালন করতে পারেনা তাই পালক (দত্তক) দিবো খোঁজ পাওয়া গেলে পরে চারজনে সাক্ষী ও জন্মদাতা বাচ্চার বাবা-মায়ের স্ট্যাম্পে সই স্বাক্ষরে বাচ্চা নিয়ে আসি এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন,বাবা-মা ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের বাচ্চাকে একজনকে দত্তক দিয়েছিল কিন্তু এখন বাচ্চা ছাড়া থাকতে পারে না আবার যারাও নিয়েছে তারাও বাচ্চাকে দেখতে দেয়না,যেনো দেখতে না পরে বিভিন্ন জায়গায় রাখতো পরে গতকাল রাতে কান্নাকাটি করে থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করে পরে পুলিশ পাঠিয়ে বাচ্চাকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়।
পরে আজকে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সামনেই আসল বাবা-মায়ের কাছে বাচ্চাটিকে দেওয়া হয়েছে। টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ওরা নিজেরা নিজেরা আত্মীয় হয়।
যাযাদি/ এম