শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

জগন্নাথপুরে আমন ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

গোলাম সারোয়ার, জগন্নাথপুর প্রতিনিধি
  ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৪
আপডেট  : ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫০
ছবি : যায়যায়দিন

খাল-বিল, নদী,নালা, হাওর অধ্যুশিত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা। এই উপজেলার প্রধান দুটি ফসল বোরো ও আমন ধান। প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোধান ও সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান চাষাবাদ হয়।

জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় নির্ধারিত লক্ষমাত্রা অনুযায়ী চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার ৬শত ৪০ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। আমন ধান চাষাবাদে ১৩শ কৃষককে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়। এবার রোপা-আমন ধান চাষাবাদের মৌসুমে উপজেলার অনেক এলাকায় বন্যার কারণে সময়মতো বীজতলা তৈরি করা সম্ভব হয়নি, বন্যার পানি নেমে গেলে উপজেলার কৃষকরা বিলম্বে আমন ধান রোপণ করেন।

হলদিপুর-চিলাউড়া ইউনিয়নের খাগাউড়া গ্রামের কৃষক কবির উদ্দিন বলেন, ৫বিঘা খেতে আমন ধান চাষ করেছি, ধানগাছের অবস্থা ভালো, পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমনটা নেই, আশাবাদী ভালো ফলন হবে। রানীগঞ্জ ইউনিয়নের রৌয়াইল গ্রামের কৃষক আজির উদ্দিন বলেন, ১০বিঘা হাইব্রিড ও উফসী জাতের ধান চাষ করেছি, ধানের শীষ বেড়িয়েছে, দুর্যোগে ক্ষতি না হলে সময়মতো পাকা ধান ঘরে তুলতে পারবো। একই ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের কৃষক মনজুর আহমদ বলেন, প্রথমে যে ধান রোপণ করেছিলাম হটাৎ বন্যার পানি এসে তলিয়ে যায়, বন্যার পানি নামার পড়ে ছাড়ধান কিনে এনে রোপণ করেছি, বিলম্বে রোপণ করেছি, দেখা যাচ্ছে ফলন ভালো হবে।

পাইলগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের কৃষক, সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার ৩০বিঘা খেতের ধান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বন্যার পানি নামলে ঋণের টাকায় আবার চাষ করেছি, পোকামাকড়ের আক্রমণ নেই, ধানের শীষ গুলো ভালো দেখা যাচ্ছে। গোতগাঁও গ্রামের কৃষক শায়েস্তা মিয়া বলেন, চার বিঘা জমির ধান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরে আবার রোপণ করেছি, প্রতি বছরের মতো এবার খেতে ধানের ফলন ভালো হবে আশাবাদী।

জগন্নাথপুর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সুমন চন্দ্র দাস বলেন, রোপা-আমন ধান চাষাবাদের পর থেকে মাঠ পর্যায় গিয়ে, চাষের দেখে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি।

জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কাওসার আহমেদ বলেন, এবার উপজেলায় আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে, কিছু এলাকায় বন্যার কারণে বিলম্বে রোপণ করা হয়েছে, বিশেষ করে আবহাওয়া অনুকূলে ছিলো এবং বৃষ্টিপাত হয়েছে এজন্য পোকামাকড়ের আক্রমণ ছিলনা। কলকলি, পাটলী ও মিরপুর ইউনিয়নে ১০% ধান পেকেছে এবং ১% ধান কাটা হয়েছে। চলতি রোপা-আমন মৌসুমে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ হাজার ৫শত ২০ মেট্রিটন। আশাবাদী এবার উৎপাদন লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। যেহেতু জগন্নাথপুর উপজেলা বোরোধান চাষাবাদের এলাকা, বোরোধানটা বেশি হয়, তার পাশাপাশি আমন ধানের জনপ্রিয় বাড়তেছে, দিনদিন জমির পরিমাণ বাড়ছে এবং আমনের আওতায় আসতেছে। জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষির সম্ভবনাময় এলাকা, বোরোধান, আমন ও আউশধান সহ মৌসুমি শাকসবজি চাষাবাদের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে