অবশেষে নিজের প্রতিষ্ঠিত মাদরাসার পাশেই শায়িত হলেন মাও জালাল আহমাদ
প্রকাশ | ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:১৮
শেষ পর্যন্ত নিজের প্রতিষ্ঠিত মাদরাসার পাশেই চির শায়িত হলেন নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলা সদরের হামিউসসুন্নাহ কাচারী মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মুহতামিম মরহুম মাও জালাল আহমাদ।
তার মৃতদেহ কোথায় দাফন করা হবে গ্রামের বাড়ীতে না মাদরাসার পাশে এই নিয়ে দুটি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে শেষ পর্যন্ত মাদরাসার পাশেই তিনি শায়িত হন।
এর আগে আজ বুধবার দুপুর ২.৩০ মি. পূর্বধলা উপজেলার সদরের হামিউসসুন্নাহ কাচারী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মুহতামিম মরহুম জালাল আহমাদ এর জানাজা পূর্বধলা জগৎমণি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। তার জানাজায় হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে।
জানাজা শেষে পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মৃতদেহ আগিয়া ইউনিয়নের কালডোয়ার নিজ গ্রামের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার পথেই বাঁধে বিপত্তি।
মাদরাসার সাবেক শিক্ষার্থী, মুরিদ, ও মাদরাসার আশে পাশের হাজারো লোকজন পূর্বধলা কলেজ রোড থেকে মেইন রোডে উঠার মুহুর্তেই মৃতদেহ বহনকারী ফ্রিজিং গাড়িটিকে আটকে দেয়।
এ সময় পরিবারের লোকজন চায় মৃতদেহ কালডোয়ার নিয়ে যেতে আর মাদরাসার আশের-পাশে লোকজন ও শিক্ষার্থীরা চায় মাদরাসায় নিয়ে যেতে। এনিয়ে দুইপক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। দীর্ঘক্ষণ বাক বিতন্ডার পর মরদেহ নিয়ে গাড়িটি পূর্বধলা জামতলা এলাকায় প্রতিষ্ঠিত পূর্বধলা হামিউসসুন্নাহ মাদরাসায় নিয়ে আসতে বাধ্য হয়। শেষে সেখানে আগে থেকে তৈরী করে রাখা কবরে তাকে দাফন করা হয়।
মাও: জালাল আহমাদ (৭৫) গত মঙ্গলবার সন্ধায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্নালিল্লহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ৩পুত্র ও ৫ কন্যা সন্তানসহ অংসংখ্যা গুণগ্রাহি রেখে গেছেন।
কালডোয়ার গ্রামের বাসিন্দা মো: ফজলুল হক জানান, হুজুরের মৃত্যুর পর তাকে কোথায় দাফন করা হবে এই নিয়ে দুটি পক্ষ দুই জায়গায় দাফন করার জন্য দাবী করেন। মাদরাসার সাবেক শিক্ষার্থী, মুরিদ ও মাদরাসার আশে পাশের লোকজনের দাবী হুজুর জীবিত অবস্থায় অসিয়ত করে যান তাকে মাদরাসার পাশে কবর দেওয়ার জন্য।
পরিবারের পক্ষে থেকে দাবী করা হয় কালডোয়ার গ্রামের নিজ বাড়ীর পাশেই কবর দেওয়ার জন্য। এই নিয়ে রাতভর আলোচনা করে কোন সিদ্ধান্ত না আসায় দুই পক্ষই তাদের দাবীতে অনড় থাকে। ফলে তারা দুই জায়গায়ই কবর খুড়ে প্রস্তুত রাখে। পরে আজ বুধবার জানাজা শেষে মরদেহ বাড়ীতে নিয়ে আসার পথে মাদরাসার সাবেক শিক্ষার্থী ও আশেপাশের লোকজন গাড়ীর পথরোধ করে এবং মৃত দেহ মাদরাসায় নিয়ে আসে। পরে সেখানেই তাকে কবরস্থ করা হয়।
জালাল আহমাদ শিক্ষার প্রথম জীবনে সাধারন শিক্ষায় এইচএসসি পর্যন্ত লেখা পড়া করেন। পরে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদীছ পর্যন্ত লেখা পড়ে করে পূর্বধলা উপজেলা সদরের জামতলা এলাকায় পূর্বধলা হামিউসসুন্নাহ কাচারী মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করে পরিচালনা করে আসছিলেন।
পরবর্তীতে মহিলা শাখা খোলেও মাদরাসার শিক্ষার প্রশার ঘটান। তিনি একজন স্পষ্ঠভাষী আলেম হিসেবে সবার কাছে সমাদৃত ছিলেন। তার মৃত্যূতে সেহলা মাদরাসার মুহতামিম মাও: আহমদ হোসেন পীর সাহেব, ইত্তেহাদুল মাদারিসিল আরাবিয়া পূর্বধলা উপজেলা শখার সভাপতি মুফতি ওয়ালিউল্লাহ কাসেমী, সাধারন সম্পাদক হাফেজ মাও: মোশাররফ হোসাইন খান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নেত্রকোণার জেলা শাখার আমির মাও: ছাদেক আহমাদ হারিছ, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব বাবুল আলম তালুকদার গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
যাযাদি/ এম